গাংনীর বিভিন্ন গ্রামে বহিরাগত বেদে যাযাবররা অস্থায়ী স্থাপনা গেড়ে প্রতিনিয়ত শিকার করছেন বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। পাখিদের শিকার করে মুখরোচক খাবার হিসেবে খাচ্ছে তারা। সকাল হলেই গুলতি নিয়ে পাখি শিকারে বেরিয়ে পড়ছেন বেদে সম্প্রদায়ের লোকজন। গ্রামের বিভিন্ন বাগান ও বাড়ির আঙ্গিনার গাছে বসে থাকা পাখিদের জীবন দিতে হচ্ছে পাখিদের।
এতে এলাকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পাখি। বেদে যাযাবরদের অনেককেই গুলতি হাতে পাখি শিকারের চিত্র দেখা গেছে গাংনীর ভাটপাড়া ডিসি ইকোপার্কের অভ্যন্তরে। পাখি শিকারের বিষয়টি স্থানীয়রা প্রশাসনকে জানালে তাৎক্ষনিক পাখি শিকার বন্ধ করে দেন উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন আগে ভাটপাড়া কাজলা নদীর পাড়ে ডিসি ইকোপার্কের পার্শে ১০০ জনের একটি বেদে যাযাবরের দল স্থাপনা গেড়ে বসবাস শুরু করেন। সকালে যাযাবর সম্প্রদায়ের নারীদল বিভিন্ন তাবিজ ও গাছ গাছড়া বিক্রি ও সাপ খেলা দেখানোর জন্য উপার্জনে বের হন গ্রামে গ্রামে। যাযাবরদের অনেক পুরুষ গুলতি ও পাখি শিকারের নানা সরঞ্জাম নিয়ে বের হন পাখি শিকার কাজে। বন বাদার ও বিভিন্ন বাড়ির আঙ্গিনায় থাকা ঘুঘু,শালিক,বক শিকার করে নিয়ে আসেন। বিশেষ করে ইকোপার্কের অভ্যন্তরে শতবর্ষী অনেক গাছেই ঘুঘু শালিক বাসা বেঁধেছে। এসকল পাখিদের জীবন দিতে হচ্ছে বেদে যাযাবরদের হাতে। পাখি শিকারের বিষয়ে
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) মোছাঃ রনি খাতুনকে সংবাদ দেয়া হলে তাৎক্ষনিক ভাবে প্রতিনিধি পাঠিয়ে বেদে যাযাবরদের শতর্ক করেন এবং পাখি শিকার বন্ধ করেন।
বেদে যাযাবরদের সর্দার আব্দুস সাত্তার জানান, পাখি শিকার বন্ধের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধ করে গেছেন। আমি আমাদের এখানকার সকলকে নিষেধ করেছি। এখন থেকে আর কোন ব্যাক্তি পাখি শিকার করবেনা।
সাহারবাটি ইউনিয়ন ভ’মি সহকারি কর্মকর্তা নুরুল হুদা জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাখি শিকার বন্ধের জন্য আমাকে নির্দেশনা দেয়া হলে আমি তাৎক্ষনিক বেদে যাযাবরদের কাছে যায় এবং তাদের নিষেধ করলে তারা আর পাখি শিকার করবেনা বলে প্রতিশ্যতি দিয়েছেন।
মেহেরপুর জেলা পাখি সংরক্ষণ কমিটি (বার্ড ক্লাব) এর সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল হক মানিক জানান, পাখিদের অভায়াশ্রম না থাকায় জেলা থেকে অনেক পাখি বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। পাখিদের প্রজননের যথাপোযুক্ত পরিবেশ না থাকায় পাখিরা তাদের বংশ বিস্তার করতে পারছেনা। ফলে যে পাখিগুলি আমাদের অঞ্চলে আছে সে পাখিদের রক্ষা করা প্রতিটি মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের প্রতিটি মানুষ নিজ নিজ দায়িত্বে পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে পাখি শিকার বন্ধ হবে। বিশেষ করে বেদে যাযাবরা পাখি শিকার করলে তাৎক্ষণিক প্রশাসনকে জানানোর অনুরোধ জানান তিনি।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনি খাতুন (ভারপ্রাপ্ত) জানান, পাখি শিকার দন্ডনীয় অপরাধ। স্থানীয়রা আমাকে এবিষয়ে জানিয়েছেন। আমি তাৎক্ষনিক পাখি শিকার বন্ধের জন্য নিদের্শনা দিয়েছি। এর পরেও যদি কেউ পাখি শিকার করে তাহলে সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।