গাংনী উপজেলার সাহারবাটী ইউনিয়নের হিজলবাড়ীয়া গ্রামের উত্তরপাড়া বায়তুল আমান জামে মসজিদের পদত্যাগি সাধারণ সম্পাদক শাহাবুল ইসলামের সংবাদ সম্মেলনের একদিন পর পাল্টা পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন কমিটির সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে হিজলবাড়িয়া গ্রামে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ সাজেদুর রহমান। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন কমিটির সভাপতি হাজী তোফাজ্জল হোসেন।
মসজিদের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে সদ্য পদত্যাগি সাধারণ সম্পাদক শাহাবুল ইসলামের সংবাদ সম্মেলনের একদিন পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযােগ তুলে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
লিখিত বক্তব্যে মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ সাজেদুর রহমান বলেন, উত্তরপাড়া বায়তুল আমান জামে মসজিদে এই মহল্লার মানুষের পাশাপাশি হিন্দা গ্রামেরও কিছু মুসল্লী নামাজ আদায় করেন।
মসজিদের বিভিন্ন উন্নয়ন করতে এলাকার মানুষ সাহায্য সহযোগিতা করে আসছেন। মসজিদের জন্য আদায়কৃত সকল অর্থ সচ্ছতার সাথে আয় ব্যয়ের হিসাব নিকাশ রাখা হয়। আমি কোষাধ্যক্ষ হওয়ার পর সাধারণ সম্পাদক শাহাবুল ইসলাম মসজিদের অর্থ নয়- ছয় করতে পারেনি। তাই সে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নানা ষড়যন্ত্র করে আসছেন। ইতোমধ্যে এই কমিটির সভাপতি হাজী তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে স্বচ্ছতার সাথেসজিদটির বিভিন্ন উন্নয়ন করা হয়েছে। এসব উন্নয়নের খরচের পাকা ভাউচার সংরক্ষণ করা হয়েছে। সেইসি ভাউচারে সাধারণ সম্পাদক শাহাবুল ইসলামের স্বাক্ষর রয়েছে।
গত ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মসজিদের আয় হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। খরচ খরচা বাদ দিয়ে বর্তমানে এক লাখ চার হাজার টাকা ব্যাংকে রাখা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সাধারণ সম্পাদকের নিকট আত্মীয় আলী হােসেনের জন্য মসজিদের টাকা ধার চেয়েছিলেন। মসজিদের টাকা তাকে ধার না দেওয়ায় আমার উপর ক্ষিপ্ত হন তিনি।
কোষাধ্যক্ষ আরও বলেন, মসজিদটি তাদের যায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় কোনো ছোট খাটো সমস্যা নিয়ে গেটে তালা মেরে নামাজ বন্ধের হুমকি দিয়ে থাকেন তিনি।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত সবেবরাতের রাতে এশার নামাজ পড়া নিয়ে মুসল্লীদের মধ্যে বাকবিতন্ডায় এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের লোকজন আহত হলেও শাহাবুল ইসলাম বাদি হয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি হাজী তোফাজ্জল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ সাজেদুরসহ এলাকার অনেকের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এই সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের ও প্রতিপক্ষের একজন করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে আহতরা কার আঘাতে জখম হয়েছে এটা নির্নয় না করেই আমাদের লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন। এই মিথ্যা ও বানোয়াট মামলাটি প্রত্যার করার আহবান জানান তিনি।
এছাড়াও শাহাবুল ইসলাম মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক থাকায় মসজিদের টাকা আত্মসাত করেছেন।
আমি মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার হিসাবে দীর্ঘ বছর নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। তারপরও শাহাবুল আমার নামে মিথ্যা প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। যা দু:খজনক।
সংবাদ সম্মেলনে মসজিদ কমিটির সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বিভিন্ন মিডিয়ার স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মসজিদে শবেবরাতের রাতে এশার নামাজ শেষে নামাজ পড়ানো ইমাম নিয়ে বিবাদমান দুটি পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন। এদের মধ্যে বাদশা মিয়া নামের একজন মুসল্লী ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঘটনায় উভয় পক্ষই গাংনী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।