মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মিনাপাড়া গ্রামে মুক্তিপণের দাবিতে আবির হোসেন (১২) নামের এক শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে গাংনী থানা পুলিশের একটিদল সন্দেহভাজন হত্যাকারীদের তথ্যের ভিত্তিতে গ্রামের মাঠের একটি ধৈঞ্চা ক্ষেত থেকে আবিরের হাত বাঁধা লাশ উদ্ধার করে।
নিহত শিশু আবির হোসেন পার্শ্ববর্তী আলমডাঙ্গা উপজেলার সরিষাডাঙ্গা গ্রামের প্রবাসী আসাদুল হকের ছেলে। তার বাবা বিদেশ থাকার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই মিনাপাড়া গ্রামে তার নানা রেজাউল হকের বাড়িতে মায়ের সাথে থাকে। আবির হোসেন স্থানীয় মিনাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার বিকেলে আবির নিখোঁজ হয়। বিকেল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত কোথাও আবিরের খোঁজ না পেয়ে পরিবারে হতাশা নেমে আসে। একপর্যায়ে গ্রামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায় যে,আবিরকে স্কুল ফিল্ড থেকে নূহু মেম্বরের ছেলে ও অন্যজন মোটর সাইকেল করে বিকেলে নিয়ে যেতে দেখেছে।এরই সূত্র ধরে সন্দেহভাজন দৃর্বৃত্তদের জিজ্ঞাসাবাদের এপর্যায়ে নিখোঁজের কারন জানতে পাওয়া যায়।
পরে স্থানীয় ক্যাম্প পুলিশ, গাংনী থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তি দেয়। দোষীদের বর্ণনা মতে মিনাপাড়া গ্রামের মাঠের ধৈঞ্চা ক্ষেত থেকে আবিরের লাশ উদ্ধার করা হয়।একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় তার নানা রেজাউল হক ও মা রোজিনা খাতুন।
এ ঘটনায় মিনাপাড়া গ্রামের নুহু মেম্বরের ছেলে হামিম হোসেন ওরফে নূর (১৫) ও একই গ্রামের মিরাজুল ইসলামের ছেলে মুজাহিদকে(১৫) আটক করা হয়েছে।এরা দুজনই স্থানীয় মিকুশিস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। এরা বখাটে এবং মাদকাসক্ত ।এদের বিরুদ্ধে ছাত্রী উত্ত্যক্ত করা চুরি এবং নানা অপকর্মে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ রয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে আবিরের ছোট নানা জহুরুল ইসলাম জানায়,শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই আবিরের মোবাইল ফোন থেকে একটি অপহরণকারীদল তার মা ও বাবার মোবাইল নাম্বারে কল করে ১ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তারা মুক্তিপন পেতে প্রবাসী আসাদুলের সাথে অগোছালো ভাবে মোবাইল ফোনে হিন্দা ভাষায় কথা বলে। যেটা ফোনের কল রেকর্ড থেকে পাওয়া গেছে। মুক্তিপণ দিয়ে হলেও ছেলেকে ফেরত পেতে আকুল মিনতি জানান আবিরের বাবা আসাদুল ইসলাম ও মা রোজিনা খাতুন। তবে শেষ পর্যন্ত মুক্তিপণ না পেয়ে শ্বাসরোধে আবিরকে হত্যা করে ধৈঞ্চা ক্ষেতে মরদেহ ফেলে দেয় অপহরণকারীরা পরে গাংনী থানা পুলিশ আবিরের লাশ রাতেই উদ্ধার করে।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানানআমি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করি। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করা হয়েছে।লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।