রমজানের শুরু থেকে নিয়মিত লোডশেডিং আবার বিদ্যুৎ থাকলেও লো ভোল্টেজের কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন মেহেরপুরের গাংনীবাসী। লো ভোল্টেজের কারণে সেচযন্ত্র দিয়ে পর্যাপ্ত পানি ওঠে না। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রমজান মাস শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই ইফতার, তারাবিহর নামাজ ও সাহরির সময় লোডশেডিং যেন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গাংনী জোনাল অফিসের তথ্যানুযায়ি দুটি সাবস্টেশনের ৭টি ফিডারে ২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। গত চারদিন যাবত পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১৩ মেগাওয়াট। এই অর্ধেক বিদ্যুৎ দিয়ে গোটা অঞ্চল চালাতে হচ্ছে পল্লী বিদ্যুত সমীতীর। ফলে দিনে রাতে সমানে লোড শেডিং ও লো ভোল্টেজ দেখা দিয়েছে।
ষোলটাকা ইউপির মাসুদ মেম্বর বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে শতভাগ বিদ্যুৎ-সুবিধা নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকেও এর আগে বলা হয়েছে রমজান মাসের তিনটি সময় (ইফতার, তারাবিহর নামাজ ও সাহ্রি) কোনো লোডশেডিং থাকবে না। এরপরও কেন লোডশেডিং হচ্ছে বুঝতে পারছেন না।
কুঞ্জনগরের ধানচাষি রশিদ বলেন, লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি লো ভোল্টেজের কারণে সেচপাম্পগুলোতে পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে না। লো ভোল্টেজের কারণে অনেক পাম্প পুড়ে গেছে। সেচ নিশ্চিত করা না গেলে ফসলহানী ঘটবে। একই কথা জানালেন ধানচাষি শহড়াবাড়িয়া গ্রামের কিবরিয়া বিশ্বাস।
গ্রামাঞ্চলের লোকজনের অভিযোগ, শহরাঞ্চলে বসবাসকারী গ্রাহকরা বেশি বিদ্যুত সুবিধা পেয়ে থাকেন। গ্রামাঞ্চলের গ্রাহকদের দুর্ভোগ অনেকাংশেই বেশি। বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় মুসল্লিরা তীব্র গরমের মধ্যে তারাবিহর নামাজ আদায় করেন। আবার ইফতারের সময় বিদ্যুত পাওয়া যায় না। এমনি অভিযোগ করেছেন মটমুড়া গ্রামের তোফাজ্জেল।
কুঞ্জনগর জামে মসজিদের ইমাম সের আলী জানান, প্রচন্ড গরমের মাঝেও নামাজ আদায় করতে হয়। প্রতিদিন ইফতার সেহরী ও তারাবির নামাজের সময় বিদ্যুত থাকেনা। রোজার শুরু থেকেই এ অবস্থা। প্রতিবছরই এমন হয়। মধ্যরাতে লোডশেডিং দিলে ক্ষতি কী?
এ ব্যাপারে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির গাংনী জোনাল অফিসের ডিজিএম নাসিরুদ্দীন জানান, গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুত উৎপাদন না হওয়ায় জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ কমে গেছে। ফলে চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুত পাওয়া যাচ্ছে। আর সে অনুযায়ি লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে সিডিউল অনুযায়ি। তবে তাড়াতাড়ি বিদ্যুত সমস্যার সমাধান হবে বলেও আশার বাণী শুনিয়েছেন তিনি।