গাংনী উপজেলার মানিকদিয়া এগারপাড়া আলিম মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি ও লাভেলো আইসক্রিমের মালিক প্রকৌশলী একরামুল হক তাজুর বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় এ সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত অভিযোগপত্র পাঠ করেন স্থানীয় যুবক মো. সোহেল রানা।
তিনি বলেন, “ঐতিহ্যবাহী মানিকদিয়া এগারপাড়া আলিম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই এলাকার মানুষ জমি দানসহ নানা আর্থিক সহযোগিতা করে আসছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রয়াত শওকত আলী মুন্সি, খোদাবক্স মিয়া, মোজাম্মেল হক, মোবারক হোসেন, মাওলানা নজরুল ইসলাম ও আবু বকরসহ অনেকেই।”
তিনি আরও বলেন, “মানিকদিয়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে, লাভেলো গ্রুপের চেয়ারম্যান একরামুল হক তাজু বিগত সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে একটানা ১২ বছর মাদ্রাসার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এই সময় তিনি মাদ্রাসাটিকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করেন। ২০০৯ সালে তিনি নিজের ক্ষমতাবলে তাঁর পিতা মোজাম্মেল হককে মাদ্রাসার একক প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দেখান এবং ম্যানেজিং কমিটিতে আজীবন একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রাখার রেজুলেশন অনুমোদন করেন। তাঁর ভাই মো. জাহিদুল হক সাজুকে দাতা সদস্য হিসেবে ১২ বছর ধরে কমিটিতে রাখেন।”
অভিযোগে আরও বলা হয়, “সভাপতি থাকাকালীন সময়ে তিনি ও তাঁর স্ত্রী নারগিছ আরা মাদ্রাসার উন্নয়নের নামে মাদ্রাসার জমিতে মোজাম্মেল হক ফাউন্ডেশন স্থাপন করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন পদে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে মাদ্রাসার দক্ষিণ পাশে একতলা ভবনের উপর নির্মাণ করেন দোতলা ভবন। উন্নয়নের কথা বলে আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করেন তিনি।”
তিনি আরও বলেন, “নৈশ প্রহরী, আয়া ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন একরামুল হক তাজু। একসময় তিনি একজন আদম ব্যবসায়ী ছিলেন, পরে আইসক্রিম ফ্যাক্টরি দিয়ে শিল্পপতি হন। বিগত সরকারের আমলে তিনি ও তাঁর স্ত্রী অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী নারগিছ আরা বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ সরকার পরিবর্তনের পর কয়েক মাস একরামুল হক তাজু বিদেশে পালিয়ে ছিলেন।”
তিনি বলেন, “মাদ্রাসায় তাঁর সীমাহীন দুর্নীতির কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর নিয়ন্ত্রিত কিছু লোক প্রতিবাদী সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। তাঁর এই অপকর্মগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”
লিখিত বক্তব্যে আরও অভিযোগ করা হয়, “নৈশ প্রহরীর নিয়োগে বয়স জালিয়াতি করে উৎকোচ গ্রহণ করে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।”
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শামীম আহমেদ সাপ্পার, স্কুলশিক্ষক কামরুজ্জামান, যুবদল নেতা তুহিন হোসেন, আব্বাস আলী, সেলিম রেজা, জহিরুল ইসলাম, ও সোহেল রানা প্রমুখ।