স্ত্রী সাবিনা খাতুনের হত্যার পর স্বামী বিদ্যুত হোসেনের আত্মহত্যা করেছেন।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) বেলা দেড়টার দিকে বাড়ির পাশে জনৈক আনসার আলীর বাঁশবাগানে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখে গাংনী থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, খবর পেয়ে আমিসহ একটি টিম ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো।
স্থানীয়রা জানান, গতরাতের কোনো এক সময় বিদ্যুত তার পঞ্চম স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩২) কে মাথায় শক্ত কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করে থেতলিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে গাংনী থানা পুলিশের একটি টিম নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সুরোতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
নিহত সাবিনার মা নিছারননেছা জানান, গত তিনদিন সে তার শশুর বাড়ি কুমারীডাঙ্গা গ্রামে অবস্থান করছিল। গতকাল (মঙ্গলবার) সকালের দিকে স্ত্রীসহ নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। পরে স্ত্রী সাবিনা খাতুন বাবার বাড়ি ফিরে যাবার জন্য তার পিতার বাড়িতে ফোন করেন। বিকালের দিকে সাবিনা খাতুনের ভাইসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজন সাবিনা খাতুনকে নিতে আসলে বিদ্যুত ও তার চাচাত ভাইরা মিলে সাবিনার ভাই ও আত্মীয় স্বজনকে মারধর করে তাড়িয়ে দেই। এঘটনার পর রাতেই সাবিনাকে নির্মমভাবে মাথায় আঘাত করে থেতলিয়ে হত্যা করে বিদ্যুত।
ইতোমধ্যে গ্রামের লোকজন স্বামী বিদ্যুত হোসেনের সন্ধান করতে থাকে। হঠাৎ বাড়ির পাশে একটি বাঁশবাগানে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।
স্থানীয়দের ধারণা, বিদ্যুত তার স্ত্রীকে হত্যার পর গ্রেফতারের ভয়ে পালাতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যুত হোসেন বিগত চার বছরে কবিতা খাতুন, আখি খাতুন, জান্নাতুন নেছা, ইসমত আরা ও সবশেষে সাবিনা খাতুনকে বিয়ে করে।
তার শারীরিক সমস্যার কারণে তার চারটি স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে গেছে। তার পঞ্চম স্ত্রীও তাকে তালাক দিতে চাওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যা করে নিজেও পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলো বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসি।
উল্লেখ্য, বিদ্যুত গত চার বছরে মোট ৫ জন নারীকে বিয়ে করলেও প্রতিটি স্ত্রী এক সপ্তাহ বা ১৫ দিন থাকার পর তাকে তালাক দিয়ে চলে গেছে। সাবিনা খাতুনকে প্রায় ১ মাস পূর্বে বিয়ে করেন। এদিকে ঘটনাস্থলে মেহেরপুরের এএসপি সার্কেল অপু সরোয়ার, গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।