মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের গাড়াডোব গ্রামের বিভিন্ন বিত্তবানদেরকে টাকার বিনিময়ে হতদরিদ্রের ঘর করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তাছাড়াও কর্মসৃজন প্রকল্পেও অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছে এলাকার ভুক্তোভোগি দরিদ্র শ্রেনীর লোকজন।
এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো: ওসমান গনি একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ ছাড়াও মাসিক আইন শৃংখলা মিটিং বিষয়টি তুলে ধরলেও এ বিষয়ে এখনও কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হয়নি।
জানা যায়, হতদরিদ্রদের যাদের জমি আছে কিন্তু ঘর নাই বা ঘর করার সামর্থ্য নাই তাদের জন্য সরকার ঘর বরাদ্দ করেছেন। এই প্রকল্পের আওয়তায় গাড়াডোব গ্রামের মেম্বর ও বিএনপি নেতা ফিরোজ অর্থ ও স্বজন প্রীতির মাধ্যমে হতদরিদ্রদের বঞ্চিত করে বিত্তবান ও তার আত্মীয়দের পাইয়ে দিয়েছেন।
গাড়াডোব গ্রামের বিত্তশালী মৃত আবুল হোসেনের ছেলে ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম যার ঐ গ্রামে তেল ও সারের দোকান সহ নিজেস্ব ট্রাক্টর রয়েছে জমিও রয়েছে নিজের নামে। এলাকায় সে বিত্তবান হিসেবে পরিচিত। তার নামে হতদরিদ্রের ঘর বরাদ্দ হওয়ায় এলাকাবাসি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ঐ গ্রামের মাঠপাড়ার আলমের ছেলে আলমগীরকে ঘর দেওয়া হয়েছে। আলমগীরের নিজেস্ব ট্রাক্টর ছিল। তদরিদ্রের ঘর নিজের নামে নেওয়ার জন্য আগে থেকেই ট্রাক্টর বিক্রয় করে দিয়েছেন। অথচ তার বাবা-মা এর নামেও এর আগে বয়স্কভাতা সহ সৌর বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র তারা বিএনপি করে বলে রাজনৈতীক বিবেচনা করে বিএনপি নেতা চেয়ারম্যন আখেরুজ্জামান তাকে হতদরিদ্রের ঘর দিয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
ফিরোজ মেম্বরের চাচাতো ভাই আবুল হোসেন ঐ মহল্লার প্রধান মাতব্বর সে বেশ স্বচ্ছল তাকেও হতদরিদ্রদের ঘর বরাদ্দ দিয়েছে চেয়ারম্যান ও মেম্বর। এখানে স্বজন প্রীতি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এছাড়াও ফিরোজ মেম্বরের ভাইরাভাই বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল রউফের ছেলে মাহাতাবকে হতদরিদ্রের আওতায় নাম দিয়ে ঘর বরাদ্দ দেওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, তাদের যে বাড়ি আছে তার গেটের দামে ঐরকম বাড়ি হয়ে যাবে। তাছাড়াও মাহাতাবের দু ভাই সিংগাপুরে থাকে।
ধানখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান একজন বিএনপি নেতা বলেই প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার যে উদ্দেশ্য তা কখনও সফল হতে দেবেনা বলেই ঘোষণা দিয়ে তারা হতদরিদ্রদের বরাদ্দকৃত ঘর বিএনপি সমর্থিত এবং নাশকতার মামলার আসামীদেরকে অর্থের বিনিময়ে বিত্তবানদের দিয়ে শেখ হাসিনার স্বপ্নকে ধুলিস্যাত করছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ওসমান গনি।
তিনি বলেন গাড়াডোব জলিবিল পাড়ার বিএনপি নেতা স্বপনের নামে বন্ধু চুলার ডিলারশিপ রয়েছে এছাড়াও নিজেস্ব টিভিএস আরটিআর গাড়ি রয়েছে সে কিভাবে হতদরিদ্রদের ঘর পাই।
এছাড়াও কর্মসৃজনে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। তারা জানান কর্মসৃজনে মেম্বর ফিরোজুল ইসলাম ও চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান মিলে লুটপাট করে খাচ্ছে। যেখানে ৬০ জন শ্রমীক লাগে সেখানে তারা দুজন মিলে ৩৫ জন শ্রমীক দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। তাছাড়া ৪০ দিনের কাজ ৩৫ দিনে শেষ করারও নজির তাদের রয়েছে। ৪০ দিনের কাজ ৩৫ দিনে করলেও তারা ৪০ দিনের কাজের বিল উত্তোলন করে বাকি টাকা আত্মসাত করে থাকে।
আওয়ামী লীগ নেতা ওসমান গনি বলেন, এ ধরণের অনিয়ম তারা এর আগেও করেছে এখনও করছে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তারা দুজন মিলে আজীবন অনিয়ম দূর্নীতি করে যাবে।
কর্মসৃজন প্রকল্পে সরকারি চাকুরিজীবীও, চৌকিদার সহ নিজেস্ব ক্যাডার বাহিনীর নাম দিয়ে কর্মসৃজনের টাকা আত্মসাত করে আসছে।
এসকল অনিয়মের কথা এর আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমানের কাছে জানিয়েছেন বলে ওসমান গনি সাংবাদিকদের জানান। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান তাদেরকে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে আশ্বস্ত করেছেন বলে জানান ওসমান গনি।
এদিকে গাড়াডোব গ্রামবাসিদের একাংশ উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এ খালেকের সাথে দেখা করে এ ধরনের অনিয়ম ও আত্মসাতের বিষয়ে জানান।
উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এ খালেক তাদের আস্বস্ত করেন এবং অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
মেপ্র/ইএম