মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়নের হিজলবাড়িয়া গ্রামের পূর্বপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১০ টি হাতবোমা, বোমা তৈরীর গান পাউডার, পেরেক ও গাঁজা, গাঁজা উদ্ধার করেছে গাংনী থানা পুলিশ।
আজ শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারী) রাত সাড়ে ৮ থেকে সাড়ে ৯ পর্যন্ত ওই বাড়ির একটি কক্ষে ঘন্টা ব্যাপি অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করা হয়।
বাড়ির মালিক হিজলবাড়িয়া গ্রামের রাজ্জাক আলীর ছেলে আব্দুল জাব্বারসহ পরিবারের লোকজন এখন পলাতক।
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাকের নির্দেশে উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদের নেতৃত্বে, উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) মামুন ও সংগীয় ফোর্সসহ অভিযান চালান পুলিশের ওই দলটি।
গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, রাত ৮ টার দিকে গোপনে একটি খবর আসে আব্দুল জব্বারের বাড়ির নিজ কক্ষে দুটি হাতবোমা রয়েছে।গোপন সংবাদের ভিত্ত্বিতে থানা থেকে উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদের নেতৃত্বে উপসহকারী (এএসআই) মামুন ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ রাত ৯ টার দিকে অভিযান শুরু করা হয়।উপরে টিনের ছাউনি ও চারদিকে পাটকাটির বেড়া দিয়ে ঘেরা ঘরের একটি কক্ষের ভিতরে অনেক লেপ কাঁথাসহ বিভিন্ন মালামালের নিচে মাটির হাড়ির ভিতর থেকে লাল কসটেপ মোড়ানো ৫ টি হাত বোমা উদ্ধার করা হয়।পরে ঘরের একটি কোনায় একটি বাজার করা চটের ব্যাগের মধ্যে থেকে ৩ টি ও একটি প্লাস্টিকের ডামের ভিতরে পলিথিন মোড়ানো আরো ২ টি হাত বোমা, হাতবোমা তৈরীর প্রায় ১০০ গ্রাম গান পাউডার, পেরেক, প্রায় ১০০ গ্রাম গাঁজা, গাঁজা কাটার কোলকি ও অন্যান্য সরাঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অভিযানের আগেই পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির মালিক আব্দুল জাব্বার, তার স্ত্রী, ছেলে ইটভাটার ট্রলি চালক সোহেল রানা ও ছোট ছেলে সম্রাটকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।
ওসি আব্দুর রাজ্জাক আরো জানান, হাতবোমা তৈরীর ধরণ ও বোমা তৈরীর সরঞ্জাম দেখে মনে হচ্ছে সে প্রফেসনাল বোমা তৈরীর কারীগর। সে এলাকায় বহুদিন থেকে ছোট খাটো চুরি, ডাকাতিসহ ইটভাটাতে চাঁদাবাজি করতো বলেও এখন এলাকাবাসি জানিয়েছেন।
স্থানীয় সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ড (হিজলবাড়িয়া) সদস্য (মেম্বর) রিপন আলী জানান, আব্দুল জাববার পেশায় একজন খেজুর গাছ কাটার গাঁছি।সেই সাথে সে চাষাবাদ করতো। তার বিরুদ্ধে ছোট খাটো চুরি চামারি করার বহু অভিযোগ রয়েছে এলাকায়। কয়েখদিন আগে এই গ্রামের কৃষক শুকুর আলীর জমির সেচ কাজের একটি মটার চুরি করেছিল সে।শুকুর আলী ও আব্দুল জাব্বার পরশপর আত্মীয় হওয়ায় গোপনে সে বিষয়টি মিমাংসা করে নিয়েছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্ম করার জন্য স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু তার গোষ্ঠি অনেক বড় হওয়ায় তারা বেশ প্রভাবশালী। ভয়ে কেউ কখনো মুখ খুলতে পারেনি।সে বোমা তৈরীর মত বড় ঘটনা ঘটিয়েছে। জাব্বারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও প্রশাসনকে অনুরোধ জানান এই জনপ্রতিনিধি।
ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, আব্দুল জাব্বারের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হবে।