মেয়ের শাশুড়িকে (বিয়াইন) গাছ খাওয়ানোর অভিযোগ দিয়ে ননদ জেলেহার খাতুন ও সতীন রাজিয়া খাতুন তিনদিন আগে থেকেই নির্যাতন চালিয়ে আসছে আরছোনা খাতুনকে।
বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করে তারা। এটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে মরদেহ নিয়ে নানাভাবে নাটকও সাজিয়েছে স্বামীর পরিবার। বাড়ি থেকে আরছোনা মারা গেলেও তাকে নিয়ে স্থানীয় ক্লিনিক ও সরকারি হাসপাতালে যাওয়া। পুলিশকে না জানিয়েই তড়িঘড়ি করে মাটি দেওয়ার পায়তারা। অবশেষে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এসব অভিযোগ করেন নিহতের বড় ভাই আব্দুর রশিদ।
তিনি জানান, প্রায় ১৮/১৯ বছর আগে আমার বোন আরছোনা খাতুনের সাথে করমদী গ্রামের হাসান আলী দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এর আগে আমার বোনের ওই গ্রামেই বিয়ে হয়েছিল। পরোকিয়া করে আরছোনাকে বের করে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন হাসান। আরছোনার মেয়েকে তার চাচাত ভাইয়ের সাথে সাম্প্রতিক সময়ে বিয়ে দেন । মেয়ের শাশুড়ি নাজেরা খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই অসুস্থ হওয়াকে আমার বোন আরছোনাকে দায়ী করে সতীন ও ননদ। এ নিয়ে আমার বোনের উপর বেশ কয়েকদিন ধরেই অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছেন তারা।
নিহত আরছোনার বোন রেকসোনা বলেন, মরার আগে আমার বোন তিন দিন খাইনি। আমার দুলাভাই ২ মাস আগে সৌদী থেকে বাড়ি এসেছে। আগামিকাল তার বিদেশ ফিরে যাওয়ার কথা।
রেকসোনা অভিযোগ করেন আমার বোনের মুখে বিষের কোনো গন্ধ নেই। শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারের দাগ আছে। আমার বোনকে নির্যাতন করেই হত্যা করেছে তারা।
আরছোনা খাতুন গাংনী উপজেলার রামনগর গ্রামের আনসার আলীর মেয়ে।
তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় মেম্বর আব্দুল হামিদ বলেন, তাদের পারিবারিক ঝামেলা আছেই। তবে, তার মুখে বিষের কোনো আলামত মেলেনি।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে কি কারণে মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি এখনও পরিস্কার নয়।
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু বলা সম্ভব নয়। এঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।