গাংনী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। কয়লার বদলে পুড়ানো হচেছ কাঠ। আইন থাকলেও প্রয়োগ না থাকায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে প্রাপ্ত তথ্যমতে গাংনী উপজেলায় মোট ৫৮ টি ইটভাটা রয়েছে বেশীরভাগ ইটভাটায় পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে বৈধতার কোন কাগজ পত্র নাই। এর মধ্যে ২৩ টি ইটভাটার সাময়িক সনদ পত্র থাকলেও বাকি ৩৫টি ইটভাটার কোন অনুমোদন নেই।এগুলোর মধ্যে গাংনী পৌরসভার মধ্যে ৩ টি ও অন্যান্য অঞ্চলে ১৮টি ইটভাটা রয়েছে।প্রভাবশালী রাজনীতিকরা প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে ক্ষমতার জোরে ইটভাটা তৈরী করছে। ভাটার চিমনি তৈরীতে সরকারী নির্দেশনা থাকলেও ইটভাটা মালিকরা ১২০ফুটের পরির্বতে কোন কোন জায়গায় ৮৫ ফুট,৬০ফুট ৪০ফুট চিমনি ব্যবহার করছে।গাংনীতে সরকারী নির্দেশ ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৮৯ ও ২০০১ সনের ১৭নং অনুচ্ছেদের ৪ ও ৫ ধারায় উল্লেখ রয়েছে যে,আবাদি জমিতে কোন ইটভাটা তৈরী করা যাবেনা। ১২০ফুট উচুঁ চিমনি ব্যবহার করতে হবে।
সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি এনামুল হকসহ গাংনী পৌর এলাকার মালসাদহ গ্রামের আবাদি সবজি জমিতে ইটভাটা নির্মান করে অবৈধ ভাবে কয়লার বদলে পোড়া”েছ কাঠ।এছাড়াও গাংনী উপজেলার কসবা ভাটপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বে আবাদি জমিতে নতুন করে গড়ে তুলেছে ইটভাটা।ভাটার নির্গত কালো ধোঁয়ায় ভাটপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুলের ছাত্র ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষের শ্বাসকষ্ট,হাপানি,ক্যান্সারসহ নানা রোগের সৃষ্টি হচ্ছে।গাংনী থানা হয়ে ধানখোলা রোডে রাস্তার পার্শ্বে সরকারী রাস্তা দখল করে গড়ে তুলেছে ইটভাটা। ফলে যেকোন মুহুর্তে ঘটতে পরে দুর্ঘটনা।আর এ সকল ইটভাটায় প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজার মন জ্বালানী কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।আর এসব কাঠের উৎস সংরক্ষিত বা গৃহস্থালীর বাগান।ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ দূষিত হ”েছ।ছড়া”েছ বিভিন্ন রোগবালাই।এতে পরিবেশ যেমন নষ্ট হ”েছ,তেমনি নষ্ট হ”েছ আবাদী জমি, উজাড় হ”েছ গাছ পালা, ভারসাম্য হারাচ্ছে প্রকৃতি। ইতোমধ্যে পুলিশ প্রশাসন অবৈধ ইটভাটার তালিকা তৈরী করে অভিযান পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসনের নিকট আবেদন করলেও অজ্ঞাত কারণে অভিযান থমকে গেছে।সচেতন মহলের অভিযোগ,যেখানে সেখানে ইটভাটা তৈরী হওয়ায় আবাদী জমিগুলো নষ্ট হচ্ছে। একটি ইটভাটা তৈরী করতে কমপক্ষে ৭/৮ একর জমির প্রয়োজন হয়। অনেক সময় মাটির প্রয়োজন হলে এলাকার লোকজনের কাছ থেকে আবাদি জমির উপরের এক থেকে দেড়ফুট মাটি কেটে ইট তৈরী করে।এতে ফসলী জমির উর্বরা শক্তি নষ্ট হয়।শুধু তাই নয়, ইটভাটার নির্গত কালো ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হ”েছ ও আবাদি জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে।কোন ইটভাটায় অনুমতিপত্রের শর্তানুযায়ী এক টুকরা কয়লা ব্যবহার করা হয় না।ব্যবহার করা হয় কাঠ।বিশেষ করে ফলজ ও বনজ বৃক্ষ ছাড়াও বাঁশের মোথা ব্যবহারের ফলে বাঁশঝাড় উজাড় হচ্ছে।
সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে এসকল ইটভাটায় কয়লার বদলে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে।মাঝে মধ্যে প্রশাসনের লোকজন জরিমানা আদায় করলেও ইটভাটা বন্ধ করেনা। ফলে প্রভাবশালীরা প্রতি বছর নতুন নতুন ইটভাটা তৈরী করছে।গাংনী উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি এনামুল হক বলেন,সরকারী ভাবে কাঠ পোড়ানো নিষেধ রয়েছে তার পরেও আমরা কাঠ জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করছি।পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।এছাড়াও বিভিন্ন মিলে কাঠ পোড়ানো হ”েছ। বাংলাদেশে সবজায়গায় অনিয়মের মাধ্যমে কাজ চলছে।সরকার ২৫সালের মধ্যে সকল অবৈধভাটা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।আবাদি জমিতে ও স্কুলের পার্শে ভাটা নির্মানের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিজে ভাটপাড়া স্কুলে পার্শ্বে ভাটা নির্মানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছিলাম সেখানে ভাটা নির্মাণ করেছে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রিয়াজুল আলম জানান,ইটভাটায় নির্গত কালো ধোঁয়ায় মানুষের শ্বাসকষ্ট,হাপানি,ক্যান্সারসহ নানা রোগের সৃষ্টি হয়।তাছাড়াঅতিরিক্ত কার্বণ-ডাই অক্সাইডের কারণে ফসল ও এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়।অনতি বিলম্বে পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনিক পদক্ষেপ জরুরী।গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন,কোন ব্যাক্তি যদি আবাদি ফসলী জমিতে বা স্কুলের পার্শে ইটভাটা নির্মান করে তাহলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ইটভাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড.মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান বলেন, আমি একটি মিটিংয়ে রয়েছি পরে কথা বলা হবে।