দুই বউয়ের মানষিক অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন দিলেন ডেকোরেটর ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা।
আজ মঙ্গলবার (২৮ জুন) বিকালে গাংনী-কাথুলি সড়কের নওপাড়া বাজারের উপর গোলাম মোস্তফার নিজের ব্যবহৃত একটি চাইনা ১০০ সিসির মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। এসময় তার গোলাম ডেকোরেটর দোকানটিতেও ব্যাপক ভাঙচুর করেন। স্থানীয়রা হাজারো চেষ্টা করেও তাকে নিবৃত করতে পারেনি বলে জানান ওই বাজারের ব্যবসায়ী রাসেল আহমেদ।
গোলাম মোস্তফার মা রেবেকা খাতুন জানান, গোলাম মোস্তফার প্রথম স্ত্রী আল্পনা খাতুন। তিন ছেলে নিয়ে সুখেই সংসার করছিলো। এক বছর আগে কাথুলি গ্রামের সোনালী খাতুনের সাথে পরোকীয়া করে দ্বিতীয় বিয়ে করে। আল্পনা খাতুন তার তিন ছেলে নিয়ে নওপাড়াতে শশুরের ভিটায় থাকে। আর দ্বিতীয় স্ত্রী সোনালী খাতুন থাকেন ভাটপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পের মধ্যে। গোলাম মোস্তফা দুই স্ত্রীর কাছেই থাকে।
গতকাল সোমবার (২৭ জুন) বিকালে দ্বিতীয় স্ত্রী সোনালী খাতুন তাকে কড়া নির্দেশ দেই এখন থেকে প্রথম স্ত্রীর ও ছেলেদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেনা গোলাম মোস্তফা। এনিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে লাগাতার ঝগড়া ঝাটি চলছিল। এখবরটি প্রথম স্ত্রী আল্পনা খাতুনের কাছে পৌছানো মাত্রই সে তার বড় ছেলে রাজন হোসেনকে সাথে নিয়ে ভাটপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পে এসে পৌছান। এক পর্যায়ে সতীনে সতীনে দফায় দফায় ঝগড়া ঝাটি হয়। স্বামী গোলাম মোস্তফা দুই স্ত্রীকে বারবার নিবৃত করার চেষ্টা করে। কোনো লাভ হয়নি তাতে। এক পর্যায়ে গোলাম মোস্তফা বাজারে গিয়ে প্রথমে তার নিজের দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরে তার ব্যবহৃত চাইনা আরকে মডেলের ১০০ সিসির একটি মোটরসাইকেল আগুন লাগিয়ে ভস্মিভূত করেন।
নওপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি আবুল বাশার ও সাধারণ সম্পাদক আরাফাত হোসেন জানান, দুই স্ত্রীর অত্যাচারে দিশেহারা হয়ে পড়েছে গোলাম মোস্তফা। বাড়ির আগুনে অগ্নিগর্ভা হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন ও দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর করেছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাকে ঠেকানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
গোলাম মোস্তফার প্রথম স্ত্রী আল্পনা খাতুন বলেন, আমার ছেলে বড় হয়ে গেছে। প্রায় সময়ই তিনটি ছেলে তার বাবার খোঁজ করে থাকে। তারা বাবার আদর ভালবাসা পেতে চাই। আমি তাকে নিজের সন্তানের দিকটাও দেখতে বলি। কিন্তু সতীন সোনালী গোলাম মোস্তফাকে আমাদের কাছে আসতে দেবেনা। সে আমাদের কাছে যাওয়ায় বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করেছে দু্ই দিন ধরে।
এদিকে গোলাম মোস্তফার দ্বিতীয় স্ত্রী সোনালী খাতুন বলেন, আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফাঁসিয়ে বিয়ে করেছে। আমাকে সময় দেবে না তো বিয়ে করেছে কেনো। অভিযোগ করেন, আমাকে আশ্রয়নে রেখে সে তার প্রথম স্ত্রীর কাছে বেশীই থাকেন। তাকে আমার কাছে সময় দেওয়ার জন্যই বলেছি। এনিয়ে আমার সাথে তার গন্ডগোল শুরু হয়েছে।
গোলাম মোস্তফার ছেলে রজন বলেন, আমার বাবা প্রায় দিনেই আমার ছোট আম্মার কাছেই থাকেন। আমরা এখন বড় হয়ে গেছি। আমাদেরও তো সখ জাগে বাবার আদর পেতে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গাড়ি পোড়ানোর ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্ন থাকে। যেহেতু কেউ বাদী হয়নি। যে কারণে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিধান নেই। এছাড়া এখানে রাষ্ট্রের কোনো ক্ষতি হয়নি বিষয়টিতে।