আকতারুজ্জামান, গাংনী:
মেহেরপুরের গাংনীতে নবিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দুই বছরেও নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। নানা জটিলতায় ও অবহেলায় পড়ে আছে আংশিক নির্মিত ভবনটি। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি সরকারের ডিজিটাল রুপ রেখা বাস্তবায়নে কলঙ্ক পড়ছে। কি কারনে নির্মাণ কাজ বন্ধ, কবে নাগাদ শুরু হবে এই প্রশ্ন সবার।
১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নওয়াপাড়া নবীনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন না থাকায় বাঁশের বেড়ার তৈরী ভগ্ন ও জরাজীর্ণ ঘরেই চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। টিনের চাল আর বেড়ার ফাঁক দিয়ে শিক্ষার্থীদের গায়ে লাগে বৃষ্টির ঝাপটা এবং রোদের সময় প্রচন্ড রোদ। মেঘ উঠতে দেখলেই বই খাতা নিয়ে বাড়ি পালিয়ে যেতে হতো শিক্ষার্থীদের । শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন অনুদান থেকে পাশেই ক্লাশ চালানোর জন্য যেনো তেনো ভাবে কয়েকটি শ্রেনী কক্ষ তৈরী করে পাঠদান করানো হচ্ছে। কবে নাগাদ নির্মানাধীন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হবে তা জানেনা শিক্ষকসহ এলাকাবাসি। পিইডিপি-৩ প্রকল্পের ৬৩ লাখ ৫২ হাজার ৫শ’ টাকা ব্যয়ে নবীনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মান কাজ শুরু করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তামান্না এন্টার প্রাইজ। বিদ্যালয়ের প্রথম তলা নির্মাণ শেষে, দ্বিতীয় তলা ভবন নির্মান কাজ শুরু করার কয়েকদিনের মাথায় নির্মাণ শ্রমিকদের অবহেলা আর দুর্নীতিরভারে ২০১৭ সালের ৭ই জানুয়ারী দুপুরে ভবনের শিঁড়ি ভেঙ্গে পড়ে যায় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা । তৎকালিন সময় কাজ দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত গাংনী উপজেলা এলজিইডি’র সাব ইঞ্জিনিয়ার সামসুল হকের দাায়িত্বে এবং কর্তব্যে অবহেলার বিষয়টি সামনে আসে সাধারণ মানুষের। বিভিন্ন অভিযোগে স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের ভবন নির্মান কাজ বন্ধ করে দেয়। তোপের মুখে পড়েন গাংনী উপজেলায় দায়িত্বরত তৎকালিন প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান ও সাব ইুনিঞ্জয়ার সামসুল হক।
এ ঘটনায় প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমানের প্রশাসনিক বদলী হলেও ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যায় এসও সামসুল হক। বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় বিভাগীয় তদন্ত হয়ে নির্মানাধীন ভবন ভেঙ্গে নতুন করে মানসম্মত ভবন নির্মানের তাগিদ দেয় ভবন নির্মাণ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে। প্রায় ২ বছর অতিবাহিত হলেও আজ অবধি বিদ্যালয়ের ভবন নির্মান কাজ স্থগিত রয়েছে। কি কারনে নির্মান কাজ বন্ধ আছে এর কারন জানেনা কেউ। নির্মানাধীন ভবনের শিঁড়ি ভেঙ্গে যাবার কয়েকদিনের মধ্যে প্রায় বেশ কয়েক জন ছাত্রছাত্রী বিদ্যালয় ছেড়ে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। স্থানীয়রা সহযোগতিা করে টিনের চাল ও বাশের বেড়া দিয়ে কোনো রকমে তৈরী করে কযেকটি ক্লাশরুম। কালবৈশাখীর তান্ডব আর শিলা বৃষ্টিতে টিনগুলি ফুটা হয়ে যায় । বাঁশের বেড়াগুলিও ভগ্নও জরাজীর্ণ অবস্থায় আজো বিরাজমান। আকাশে মেঘ উঠতে দেখলেই বাড়ি পালাতে হয় শিক্ষার্থীদের।
দ্রত বিদ্যালয়ের ভবন নির্মান না হলে প্রথমিক শিক্ষা ব্যাবস্থা ভেঙ্গে পড়াসহ শিক্ষার্থী ঝরে পড়তে পারে বলে জানালেন প্রধান শিক্ষক তামজিদুর রহমান মুক্তি। তিনি আরো বলেন, ২০১৭-১৮ইং অর্থবছরে ১৭ টি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ হবে,তার মধ্যে আমাদের বিদ্যালয়টিও আছে। কিন্তু কবে নাগাদ হবে তা বলতে পারিনা। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ সুমন আহাম্মেদ সুজন জানান, প্রায় দু’বছর হতে চলেছে ভবন নির্মান কাজ স্থগিত রয়েছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াদড়ি করতে যেয়ে হাঁপিয়ে উঠেছি। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কারো সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছেনা, তবে শুনেছি পর্যায়ক্রমে ভবনটি নির্মান হবে। গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী চৌধুরী জানান,মজিদুর রহমান চৌধুরীকে জানতে চাইলে তিনি এব্যাপারে কিছু জানাতে পারেনি।