আকতারুজ্জামান,গাংনী
গাংনীর রুমা হিজড়া আজ সোমবার ভোর ৫ টার দিকে গাংনী উত্তর পাড়ার নিজ বাড়িতে অসুস্থতা জনিত কারনে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নাল্লিাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছে প্রায় (৪৩) বছর। রুমা কয়েক বছর যাবত অসুস্থ জীবন যাপন করছিলেন। আজ দুপুর দু’ই টার সময় গাংনী পাইলট প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে গাংনী কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
পারিবারিক ভাবে রুমা হিজড়া বগুড়া জেলার ধুপচাঁচিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। ৩০ বছর আগে গাংনী এলাকায় আসেন। এখানে সারজিনা হিজড়ার তত্ত্বাবধানে বসবাস শুরু করেন। গোষ্টি পরম্পরায় সারজিনা হিজড়ার মৃত্যুর পর লাইলী হিজড়া উপজেলার দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুর পর রুমা হিজড়া গাংনী উপজেলার হিজড়া সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব প্রদান করে আসছিলেন।
ছেলের পরে মেয়ে হবে, মেয়ের পরে ছেলে। বেঁচে থাকো সোনার চাদঁ। ঢোলের তালে তালে এমন কথা মুখে নিয়ে গ্রামে প্রবেশ করতেন রুমা হিজড়া। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হলেও মিশুক সভাবেই তার পরিচয়ের পরিধি বাড়িয়ে তোলে গাংনীর প্রতিটি গ্রাম এবং পাড়া মহল্লায়। রুমা হিজড়াকে গাংনী উপজেলার প্রতিটি গ্রামের নারী পুরুষ এক নামেই চিনতেন। গ্রামে গ্রামে পাড়া মহল্লায় নবজাতক শিশু নাচিয়েই রোজগার ছিল তার। স্বামী সংসার নেই হিজড়াদের তাই অনেকেই খুশি হয়ে অর্থিক সহযোগীতা করতেন সকলেই। গোষ্টির প্রতি অনেক দায়বদ্ধতার মধ্যে জীবযাপন তাদের। হিজড়াদের আপদে বিপদে দুঃখ দুর্দশায় সব সময় কাছে থাকতেন রুমা। গোষ্টিগত স্নেহে লালন করেছেন অসংখ হিজড়াদের। তার কাছে রোজগারের জন্য প্রশিক্ষণ নিয়েছেন অনেকেই। তার মৃত্যতে হিজড়াদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের মাতম। দেশ বিদেশেও রয়েছে তার অনেক শুভাকাংখি। এজগতে আপন কাউকে রেখে যেতে না পারলেও রেখে গেলেন অসংখ্য শুভাকাংখি।