মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সহড়াবাড়িয়া গ্রামে সেলিনা খাতুন (৩৫) নামের এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে।
সেলিনা খাতুন গাংনী উপজেলার সহড়াবাড়িয়া গ্রামের রাইমনতলা পাড়া এলাকার আব্দুল ওয়াহেদের স্ত্রী।
তবে, অভিযুক্ত আব্দুল ওয়াহেদ তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন আমার স্ত্রী সেলিনা খাতুন আমার প্রতিবন্ধী শিশু ছেলে নাহিদ হোসেন (৯) এর হাতে নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেলিনা খাতুন মারা যায়।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে অজ্ঞান অবস্থায় প্রথমে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে সেখান থেকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
নিহত সেলিনা খাতুনের ভাই মহিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন আমার বোনকে তার স্বামী গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার প্রতিবন্ধী ছেলের দোষ দিচ্ছে। ৮ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলে নাহিদ নিজেও নড়াচড়া করতে পারেনা বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, ধর্মচাকি গ্রামের চেংগাড়া পাড়া এলাকার আজিজুল হকের মেয়ে সেলিনা খাতুনের সাথে ১৩ বছর আগে সহড়াবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদের সাথে বিয়ে হয়।
১৩ বছরে তার দুটি সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে অনামিকা বর্তমানে জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী। ছেলেটি প্রতিবন্ধী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেশীরা জানান, নিহত সেলিনা খাতুন পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করতো। সে নামাজ রোজা করতো। তবে স্বামী তার উপর প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করতো।
সেলিনা খাতুনের বড় ভাই আরো জানান, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আমাকে খবর দেন আপনার বোন অসুস্থ। আমি গাংনী হাসপাতালে গিয়ে দেখি বোনোর গলায় ফাঁস লাগানোর চিহৃ রয়েছে।
হাসপাতালে তাকে ভর্তি না নিলে সাথে সাথে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এই কয়দিন সেখানেই আইসিউউতে রেখে সঙ্গাহীন অবস্থায় চিকিৎসা সেবা চলছিল। আজকে মারা যায় সেলিনা।
তিনি আরো বলেন, প্রথম দিন থেকেই আমার বোন জামায় আব্দুল ওয়াহেদ অসংলগ্ন কথা বার্তা বলে আসছেন। আমাদের ধারণা তাকে হত্যা করেছে তার স্বামী। এ বিষয়ে গাংনী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে নিহত সেলিনার স্বামী আব্দুল ওয়াহেদ জানান, আমি ও আমার স্ত্রী সেলিনা খাতুন এক সাথে রাতের খাবার খেয়ে আমি তামাক ঘর জালাতে যায়।
পরে রাতে ১২ টার দিকে এসে দেখি আমার স্ত্রী সেলিনা খাতুন অজ্ঞান অবস্থায় খাটের উপর পড়ে আছে। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এব্যাপারে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, এখন পর্যন্ত আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। তারপরেও আমি অফিসার পাঠিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। আর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।