মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের দুই বারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন ২৬ বছর ধরে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকলেও নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করেন না। এমনকি বাড়ির ছাড়া তো দুরের কথা সংস্কার করতেও দেন না বাড়ির মালিককে।
গাংনী পৌরসভা থেকে কয়েক দফা বাড়িটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হলেও তিনি বাড়ি ছাড়েননি। বাড়িটি সংস্কারের ব্যবস্থাও নেননি। বাড়ি ছাড়া নিয়ে মালিকের সাথে দফায় দফায় গন্ডগোল, ঝামেলা হলেও তিনি ক্ষমতাবলে বাড়িটি অন্যায় করে দখল করে রেখেছেন।
প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় বাড়ির মালিক সাবেক এ এমপি’র নির্যাতন নিরবে সহ্য করে যাচ্ছেন বছরের পর বছর। নিরবে চোখের পানি ফেলে যাচ্ছেন। কিন্তু কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। খুব দ্রুত বাড়িটি মকবুল হোসেনের কাছে থেকে ছাড়িয়ে নিতে চান বাড়ির মালিক জিনারুল ইসলাম। কিন্তু এলাকাবাসীর প্রশ্ন বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবেন কে?
বাড়ির মালিক জিনারুল ইসলাম অভিযোগ করে মেহেরপুর প্রতিদিন কে বলেন, ১৯৯৪ সাল থেকে সাবেক এমপি মকবুল হোসেন মৌখিক ভাবে গাংনী শহরের উত্তরপাড়ায় দ্বিতল বিশিষ্ট তার বাড়িটি ভাড়া নেন। ভাড়া নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত ভাড়া দেননা। মনকি মাঝে মধ্যে বাড়িটি সংস্কার করতে চাইলেও তিনি তা করতে দেননি। ক্ষমতাশালী হওয়ায় বাড়িটি ছাড়িয়েও নিতে পারছি না। বাড়িটি দ্রুত সংস্কার করার প্রয়োজন।
সংস্কার না করলে যে কোন দুর্যোগে ভেঙে পড়ার আশংকা রয়েছে। অনেক বার বাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার কথা বললেও তিনি কান দেননি। এমনকি তার পোষা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে থাকেন।
মালিক জিনারুল ইসলাম আরো বলেন, বাড়ি ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য একজন উকিলের সাথে কথা বলেছি। তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতাবান মানুষের সাথে পারবেন না বলে তিনি মামলা করতে রাজি হননি।
যে কোন অবস্থায় বাড়িটি সাবেক এমপি মকবুল হোসেনর কাছে থেকে তারা মুক্ত করতে চান। তিনি আশংকা করছেন কোটি টাকার সম্পত্তিটি তাদের হাত ছাড়া হয়ে যায় কিনা। মাস ছয়েক আগে সাবেক মেয়র আহমেদ আলী ও বামন্দি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামকে নিয়েও একটি সালিশ বসে। তখনও তিনি বাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন, কিন্তু ছাড়েননি।
এ ব্যপারে বামন্দি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জানান, বাড়িটি নিয়ে মিমাংসা হয়েছিল। বাড়িটি ছেড়ে দেবেন বলে সাবেক এমপি সাহেব কথাও দিয়েছেন। কিন্তু কবে ছাড়বেন জানেন না।
স্থানীয় কাউন্সিলর নবির উদ্দিন বলেন, দির্ঘদিন ধরে সাবেক এমপি মকবুল সাহেবের সাথে বাড়ির মালিক জিনারুলের সাথে বাড়ি ছাড়া নিয়ে গন্ডগোল হয়। তবুও তিনি বাড়ি ছাড়েন না।
গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, আগের মেয়র থাকতেই মকবুল সাহেবের বাড়িটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করে নোটিশ দিয়েছেন। সেই নোটিশের আলোকে আমরা কয়েক দফা চিঠি পাঠিয়েছি তবুও তিনি সংস্কার করার জন্যও বাড়িটি ছাড়েননি। বাড়িটি অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যে কোন সময় বাড়িটি ভেঙে প্রাণহানী ঘটতে পারে। তবুও তিনি অন্যায় করে বাড়িটি দখলে রেখেছেন।
মেহেরপুর জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন জানান, বহু পুরাতন ঝামেলা এটি। এই বাড়ি নিয়ে বহুবার ঝামেলা হয়েছে। তবুও সাবেক এমপি সাহেব বাড়িটি ছাড়েন না।
এ ব্যাপারে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেনের সাথে মেহেরপুর প্রতিদিন থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নামায পড়ছি পড়ে ফোন দেন। কিন্তু পরে ফোন দিলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।