মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাধাগোবিন্দপুর ধলা গ্রামের হাসিবুল হত্যা মামলার প্রধান আসামী কালু ওরফে মিনারুল ইসলাম কালুকে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।
রবিবার দুপুরের দিকে মেহেরপুর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় প্রদান করেন।
এসময় দন্ডিত কালু ওরফে মিনারুল ইসলাম কালু আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দন্ডিত কালু গাংনী উপজেলার রাধাগোবিন্দপুর ধলা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ৮ টার দিকে নিহত হাসিবুল কয়েকজন সমবয়সী বন্ধুসহ গ্রামের একটি চায়ের দোকানে ক্যারামবোর্ড খেলছিলেন। এসময় একই গ্রামের কালুর নেতৃত্বে মালেক, বাহাদুর, তোহিদুল, শফিরুল, বাবু ও আলালসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন মিলে তাকে হাসুয়া, রামদাসহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।
এসময় স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত হাসিবুলকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এঘটনায় নিহতের মা শাহানারা খাতুন বাদী হয়ে কালু ওরফে মিনারুলকে ১ নং আসামী করে এজাহার নামীয় ৭ জন ও অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামী করে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার জিআর মামলা নং ৬০/২০১৬ ইং।
তদন্ত অফিসার গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিল্লুর রহমান মামলার সাথে জড়িত কয়েকজনকে আটক করে আদালতে নিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ড করেন। এছাড়া মামলার প্রধান আসামী কালুকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
মামলাটি দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এসআই জিল্লুর রহমান। মামলাটিতে স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিজ্ঞ আদালতের বিচারক রবিবার এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, আসামীর বিরুদ্ধে দ:বি: ৩০২ ধারায় বর্ণিত অপরাধের অভিযোগ আনা হলেও ঘটনা পর্যালোচনা ও পারিপার্শ্বিক বিবেচনায় তিনি মুলত দ:বি: ৩০৪ ধারায় বর্ণিত অপরাধ করেছেন।
কারন, দ: বি: ৩০০ ধারায় ব্যাতিক্রম -১ এ উল্লেখ আছে যে, অপরাধী গুরুতর ও আকস্মিক উত্তেজনার ফলে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও হ্মমতারোহিত মৃত্যু ঘটালে দন্ডনিয় নরহত্যা খুন বলে গন্য হবেনা।
তাই সার্বিক বিবেচনায় আসামীকে দ: বি: ৩০৪ ধারায় বিধান মোতাবেক দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
সরকারী পক্ষে অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক ও আসামী পক্ষে অ্যাডভোকেট মারুফ আহম্মেদ বিজন কৌশলী ছিলেন।
উল্লেখ্য, নিহত হাসিবুল ইসলাম দন্ডিত কালুর স্ত্রীকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার নিজে হাতে প্রতিশোধ নিতেই কালু শাস্তি স্বরুপ হাসিবুল কে জনসম্মুখে কুপিয়ে হত্যা করে।