মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয় ও গাংনী পৌর সভার ৩০ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। বকেয়া আদায় করতে প্রতিনিয়ত নাজেহাল হচ্ছেন গাংনী পল্লী বিদ্যুৎ।
বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ের জন্য বারবার মৌখিক ও লিখিত ভাবে তাগাদা দিলেও বিল দিতে গড়িমসি করছেন বিল খেলাপি দুটি কার্যালয়। অথচ একজন ব্যক্তি মালিকানা পরপর দুই বা তিন মাসের বিল খেলাপি হলেই তার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় পিবিএস।
নিয়ম অনুযায়ী সরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান/স্বায়ত্বশাসিত/কর্পোরেশন সমুহের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা না হলে সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক নির্দেশনা দেয়া হয়।
যা বিভিন্ন গণ মাধ্যম সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলেও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও গাংনী পৌর সভায় প্রায় ৩০ লাখ টাকা বকেয়া মাথায় নিয়েও চালানো হচ্ছে বিদ্যুৎ। এদিকে মেপবিস এর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের চাপে দিশে হারা হয়ে পড়েছেন ডিজিএম।
গাংনী পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সুত্রে জানাগেছে, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসের নামে মেইন মিটার যার হিসাব নং-১৩৬/৪৪১০, ৫/৯৮ হতে বিভিন্ন সালের ১১/১৯ পর্যন্ত বকেয়ার পরিমাণ ১৩ লাখ ২৩ হাজার ৯৭৬ টাকা। (অফিস ভবন) হিসাব নং-১৩৬/৬৮৩০, বকেয়ার মাস ১১/১৮ হতে ১১/১৯ পর্যন্ত বকেয়ার পরিমাণ ২ লাখ ৩৬ হাজার ৬৫ টাকা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (আবাসিক ভবন) হিসাব নং-১৩৬/১৪৫০, বকেয়ার মাস ১/১০, ১/১৩+৯/১৩, ১+৫+১১/১৪, ৬/১৫, বকেয়া টাকার পরিমাণ ৫৩ হাজার ৩০৮ টাকা। উপজেলা নির্বাহী অফিসের (পানির পাম্প) হিসাব নং-৬৮৪০, বকেয়ার মাস- ২+৫/১৬, ৫/১৮, ১১/১৯ টাকার পরিমাণ ১৮ হাজার ৮৬৫ টাকা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাসের গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে ব্যাবহৃত মোট বকেয়ার পরিমাণ ১৫ লাখ ৬৩ হাজার ৬৭৮ টাকা।
অপরদিকে গাংনী পৌর সভার এ পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আছে ১৫ লাখ ৭৯ হাজার ৬৫১ টাকা।
সুত্রে আরো জানায়, মেহেরপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের নির্দারিত দর অনুযায়ী বাংলাদেশ বিদ্যুৎ মউন্নয়ন বোর্ডের নিকট থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ ক্রয় করে খুচরা পর্যায়ে বিক্রয় করে থাকে। অত্র পবিসকে প্রতি মাসেই ক্রয়কৃত বিদ্যুতের মুল্য নগদে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) কে পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রয়কৃত অর্থ পাওয়া না গেলে অর্থ ব্যাবস্থাপনায় জটিলতা দেখা দেয়।
অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিল সরকারি দাবি বা সরকারি রাজস্ব হিসাবে পাবলিক ডিমান্ড রিকোভারি এক্ট অব ১৯১৩ এর বিধান অনুসারে আদায়যোগ্য হলেও গাংনী জোনাল অফিসের ডিজিএম নাজেহাল হয়ে পড়েছেন।
এব্যাপারে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গাংনী জোনাল অফিসের দায়িত্বরত ডিজিএম নিরাপদ দাস জানান, বকেয়া বিল আদায়ের লক্ষে মৌখিক ভাবে বার বার তাগাদাসহ অনুরোধ করা হলেও বকেয়া পরিশোধের কোন উদ্যোগ নিচ্ছেননা উপজেলা নিবাহী অফিসার। তার পরেও বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য একাধিকবার লিখিত ভাবে অনুরোধ জানানো হয়।
গাংনী পৌর সভার মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন আমার সময়ে এক মাসের বিল বকেয়া নেই। বিগত মেয়র থাকা অবস্থায় ৫ বছর বিল না দিয়ে বকেয়া করে গেছেন। যা এখন আমার ঘাড়ে বকেয়া বিলের দায় চেপে বসেছে। তবে আস্তে আস্তে বকেয়া বিল দেয়া হচ্ছে। আশাকরি খুব শিঘ্রই সমন্বয় হয়ে যাবে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও দিলারা রহমান জানান, আমার পরিষদের টাকা বকেয়া নেই। বকেয়া আছে উপজেলা পরিষদের। আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহদ্বয়কে বলেছি বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য। সরকারি বরাদ্দে বিদ্যুৎ বিল আলাদা ভাবে বরাদ্দ না থাকায় বিল পরিশোধ করা যাচ্ছেনা। তবে খুব শিঘ্রই বকেয়া বিল পরিশোধ করা হবে।
গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ খালেক জানান, আমি আমার পরিষদের কোন বকেয়া নেই। আমি নির্বাচিত হয়ে এ পর্যন্ত এক মাসেরও বিল বকেয়া নেই। বিগত চেয়ারম্যান আমলে বকেয়া থাকতে পারে।
মেপ্র/এমইএম
আরো পড়ুন: মোবাইল ছেড়ে পড়া লেখায় মন দাও মানুষের মতো মানুষ হও