পৌরসভা পর্যায়ে নির্বাচনের আমেজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। বর্তমান মেয়রসহ বিভিন্ন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ছুটছেন জনগণের কাছে। কেউ কেউ দলের উচ্চ পর্যায়েও দোড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে মেহেরপুর প্রতিদিন এর এবারের আয়োজন ‘শহরে ভোট’ শীর্ষক সাক্ষাতকার পর্ব। মেহেরপুর প্রতিদিন এর মুখোমুখি হয়েছিলেন গাংনী পৌর সভার বর্তমান মেয়র আশরাফুল ইসলাম। সাক্ষাতকার গ্রহণ করেন আমাদের প্রতিনিধি পলাশ আহম্মেদ।
আজকের সাক্ষাতকারের চুম্বক অংশটি এখানে তুলে ধরা হলো।
মেহেরপুর প্রতিদিন: আগামী পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
আশরাফুল ইসলাম : আমি ১০০% আশাবাদী কারণ আমি জনগণের বন্ধু হয়ে তাদের সাথে মিশে কাজ করি। আমি নিয়োমিত অফিসে আসার সময় তিনটা ওয়ার্ড পরিদর্শন করি আবার যাওয়ার সময় অনেক ওয়ার্ড পরিদর্শন করে সকলের সমস্যা দূর করি। আমি কারর কাছে থেকে অন্যায় কিছু করিনা, যার পরিপ্রেক্ষিতে মানুষ আমাকে ভালোবাসে এই ভালোবাসা থেকেই আমি পাবো। তাই আমি শতভাগ আশাবাদী আগামী পৌর নির্বাচনে আমার প্রাণের সংগঠন আওয়ামী লীগ আমাকে মনোনয়ন দেবে। তাছাড়াও রাজনীতিতে প্রতিযোগীতা থাকবেই। একাধিক প্রার্থী হবে। আমার বিশ্বাস আমার রাজনৈতিক ইতিহাস ও কর্মকাণ্ড দেখে আমাকে জেলার সকলে সমর্থন করবেন।
মেহেরপুর প্রতিদিন: মেয়র হিসেবে জনগণের প্রতিশ্রুতির কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন বলে মনে করেন, যাতে করে জনগণ আপনাকে পুনরায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে?
আশরাফুল ইসলামঃ আমার এই চেয়ারে বসার বয়স ৪ বছর ৬ মাস কিন্তু এর মাঝে আমি ১ টি বছর দায়িত্বরত থাকতে পারিনি কারণ আমাকে অনেক ভাবে প্রতি হত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে যে ৩ বছর সময় ক্ষমতায় আছি তাতে আপনারা জানেন আমার নির্বাচনী এলাকায় আগে বিদে্যুৎ এর মিটা পোল এই গুলো বসাতে ২০-৩০ হাজার টাকা করে নেওয়া হতো আমি নির্বাচিত হওয়ার পর আর এই দুর্ভোগে কাউকে পড়তে হয়নি।
আমার গাংনী শহরের ভিতর আগে পানি জমা থাকতো ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছিলো খুবই দুর্বল আমি ড্রেনের কাজে উন্নয়ন করেছি। প্রতিটা ওয়ার্ডের অলিতে গলিতে পাকাকরণ, হেয়ারিং বন্ড রাস্তা করে দিয়েছি।আমার পৌর সভাতে একটা গেস্ট হাউজ করেছি।করোনা কালীন মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ত্রাণ গরীব দু:খী মানুষের ঘরে ঘরে দিয়ে এসেছি। মানুষের জন্য সরকারি সুবিধা দোর গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। তাই জনগণের উপর আমার আস্থা আছে। পুনরায় আমাকে নির্বাচিত করবে। তাছাড়া আমার উনন্নয়ন মূলক কাজজ গুলো আপনারা দৃশ্যমান ভাবে দেখতে পাচ্ছেন।
আমি গাংনী পৌরসভাকে একটি দুর্নীতি মুক্ত পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলেছি, এমন কেউ নেই যে বলতে পারবে তাদের সাথে কোন কাজের জন্য একটি টাকা অন্যায় ভাবে নিয়েছি। আমি ও আমার কাউন্সির রা সততার সাথে দায়িত্ব পারন করে আসছি। আমাদের গাংনী তে সব চেয়ে বড় যে সমস্যা টা ছিলো সেটা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা শহর সেটা এখন আমাদের ঝাড়ু দাররা রাত ২ টা থেকে ঝাড়ু দিয়ে শহর পরিষ্কার পরিছন্ন রাখছেন। ময়লা ফেলার জন্য দুই টি গাড়িও রয়েছে যা নিয়মিত ময়লা ফেলার কাজ করছে। তাছাড়া শহরের পতিটি মড়ে অফিসের সামনে ছোট ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে শহরটি অপরিষ্কার না থাকে। আমি চেয়ারে বসার পর আবর্জনা ফেলার জন্য ৬ বিঘা জমি কিনেছি।
মেহেরপুর প্রতিদিন: ইতোমধ্যে বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচনে অংশ নিবে। সেক্ষেত্রে আপনার ইউনিয়নে নির্বাচনটি কেমন প্রতিদ্বন্দি¦তাপূর্ণ হবে?
আশরাফুল ইসলামঃ বিএনপির সাথে আমাদের কোন প্রতিদন্দিতা হবে বলে মনে হয় না। কারণ বিএনপি এখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। জনগণ জানে বিএনপির নৈরাজ্যের কথা। আমার মনে হয় তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। যেখানে জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রত্যাখান করে উচিত জবাব দিবে। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে চলছে। এই উন্নয়নের ধারাবহিকতা রক্ষা করার জন্য জনগণ জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্ধারণ করা প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবে।
মেহেরপুর প্রতিদিন: আপনী যদি দলীয় নোমেনেশন না পেয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে আসবেন কি না?
আশরাফুল ইসলামঃ আমি গাংনী পৌর সভা কে মডেল পৌর সভা করার জন্য দিন রাত পরিশ্রম করে চলেছি সেটা প্রতিয়মান। জনগণ আমাকে ভালোবাসে তাই তারাই নির্ধারন করবেন আমি থাকবো কি থাকবো না। সেক্ষেত্রে জনগণ যদি আমাকে চান তাহলে অবশ্যই আমি দলীয় মনোনয়ন নিয়েই নির্বাচন করবো।
রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ থাকবে তবে অনেকেই দলীয় পদের কারণে অনেক কিছু দাবি করেন কাজের সময় খোঁজ না থাকলেও দেখবেন নির্বাচন আসলে মাঠে নেমে কাজ শুরু করে দিয়েছে দিয়ে তারাও দাবি করেন মনোনয়ন নিবেন। এ বিষয়ে কে মাঠে কাজ করেন আর কে করেন না এ বিষয়ে আমার মনে হয় আমাদের চেয়ে আমার প্রাণ প্রিয় নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব কিছু ভালো বোঝেন এবং জানেন। তাই আমি শতভাগ আশাবাদী আমাকে দলীয় মনোনয়ন দেবেন।
মেহেরপুর প্রতিদিন: পুনরায় নির্বাচিত হলে কি কি করতে চান?
আশরাফুল ইসলামঃ আমি পুনরায় পৌর মেয়র নির্বাচন হলে প্রথমেই যে কাজটি করার সপ্ন সেটা হলো গাংনীতে একটি বৃহৎ মার্কেট করবো যার নিচ তলা হাট হবে এবং উপরে মার্কেট। গাংনীতে সকল প্রকার হাট একটি যায়গাতে লিপিবদ্ধ করবো।
এবং আপনারা জানেন গাংনীতে একটি জিনিসের বড়ই অভাব সেটা হলো বাস,ট্রাকের টার্মিনাল। এটাও বাস্তবায়ন করবো ইনশাল্লাহ। এছাড়াও একটা স্টেডিয়াম করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাছাড়া ঈদগাহ, মসজিদ, মাদ্রাসার উন্নয় করব।
আপনারা জানেন, গাংনীতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল দশা ছিলো তা কোন রকম উপযোগী করে তুলেছি তবে এর আধুনিকিকরণ নিশ্চিত করার পরি কল্পনা রয়েছে। আরো একটা কাজ সেটা হলো গাংনীর দহ খাল খনন করার পরিকল্পনা রয়েছে যেখানে শহরের আবর্জনা পানি সেখানে যাবে এবং চারি পাশে গাছ লাগিয়ে রাখতে হবে যাতে সকাল বেলায় সকলে শরীর চর্চা করতে পারে। ফোল্ডেন রাস্তা করবো যার মাঝখান দিয়ে বনায়ন থাকবে এবং রাস্তার দুই পাশ দিয়ে টালি পেড়ে সাজাবো এবং পাশে বনায়ন তৈরি করে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবো। এবং গাংনীর একটি রাস্তাতে মাটি দেখা যাবেনা সকল রাস্তা পাকা করণ করবো ইনশাল্লাহ।