কিছুদিন আগেই বড়মুখ করে ম্যানচেস্টার সিটির ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা জানিয়েছিলেন, তাঁর চোখে বর্তমানে লিগের সেরা খেলোয়াড় পর্তুগিজ মিডফিল্ডার বের্নার্দো সিলভা।
আর বলবেন নাই–বা কেন? স্ট্রাইকারহীন ম্যানচেস্টার সিটিতে আক্রমণভাগে থেকে যেখানে নিয়মিত গোল করার মানুষই নেই, সেখানে মাঝমাঠ থেকেই বের্নার্দো সিলভা চেষ্টা করে যাচ্ছেন সাধ্যমতো।
গত রাতের আগপর্যন্ত সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫ গোল করা হয়ে গিয়েছিল এই পর্তুগিজ মিডফিল্ডারের। গত রাতে ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে সে তালিকায় আরও ২টি গোল যুক্ত হলো।
বের্নার্দো সিলভার ২ গোল আর রাহিম স্টার্লিংয়ের ১ গোল মিলিয়ে ওয়াটফোর্ডকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। এই জয়ের ফলেই লিভারপুলকে হটিয়ে লিগের পয়েন্ট তালিকায় আবারও শীর্ষে উঠে গিয়েছে তারা। ওয়াটফোর্ডের হয়ে একমাত্র গোল করেছেন কুচো হার্নান্দেজ।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই স্টার্লিংয়ের গোলে এগিয়ে যায় সিটি। মাঝমাঠ থেকে সিলভার মাপা পাস খুঁজে নেয় বাঁ দিক থেকে ডি-বক্সে ঢুকে যাওয়া ইংলিশ মিডফিল্ডার ফিল ফোডেনকে।
ফোডেনের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে দলকে এগিয়ে দেন স্টার্লিং। ৩১ মিনিটে নিজেই গোল করেন সিলভা। অসাধারণ এক প্রতি-আক্রমণে জার্মান মিডফিল্ডার ইলকায় গুনদোয়ানের এক শট ওয়াটফোর্ডের অস্ট্রিয়ান গোলরক্ষক ড্যানিয়েল বাখম্যান আটকে দিলেও বল চলে যায় সিলভার পায়ে। সেখান থেকে কঠিন কোণে দিয়ে বল জালে জড়ান ফর্মে থাকা এই মিডফিল্ডার।
৬৩ মিনিটে রাইটব্যাক কাইল ওয়াকারের কাছ থেকে বল নিয়ে বাঁ পায়ের দৃষ্টিনন্দন এক বাঁকানো শটে দলের ব্যবধান আরও বাড়িয়ে দেন সিলভা। ৭৪ মিনিটে ম্যানচেস্টার সিটির গোলরক্ষক এদেরসনের শততম ক্লিন শিট রাখার আশায় পানি ঢেলে দিয়ে গোল করেন ওয়াটফোর্ডের কলম্বিয়ান উইঙ্গার কুচো হার্নান্দেজ।
আগুয়েরো চলে গেছেন মৌসুম শুরুর আগেই। একমাত্র স্ট্রাইকার হিসেবে থাকা গাব্রিয়েল জেসুসকেও গার্দিওলা উইঙ্গার হিসেবেই খেলাতে বেশি পছন্দ করেন। এ কারণে একেক দিন একেক মিডফিল্ডার স্ট্রাইকারের ভূমিকা পালন করছেন।
এক দিন ফোডেন, তো আরেক দিন স্টার্লিং। কোনো দিন মাহরেজ, তো আরেক দিন কেভিন ডি ব্রুইনা। গতকাল যেমন স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেছেন জ্যাক গ্রিলিশ।
বের্নার্দো সিলভা বোঝেন ব্যাপারটা। বোঝেন বলেই মেনে নিয়েছেন, সবাইকে মিলেমিশে স্ট্রাইকারের দায়িত্ব পালন করতে হবে, ‘আমি জানি, আমাদের স্ট্রাইকার নেই।
কিন্তু আমরা জানি, আমাদের দলে অনেক খেলোয়াড় আছে, যারা সময়মতো বক্সে গিয়ে গোল দিয়ে আসতে পারে। এটাই আমরা চেষ্টা করি। আমার ভাগ্য ভালো, বল আমার কথা শুনছে!’
জোড়া গোল করে শিষ্য তাঁর দাবির যথার্থতা প্রমাণ করেছেন, গার্দিওলার সন্তুষ্ট না হয়ে যান কোথায়? ম্যাচ শেষে সে সন্তুষ্টিই ঝরে পড়েছে গার্দিওলার কণ্ঠ থেকে, ‘আমি ওকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ, আমি আগে যা বলেছিলাম, নিজের পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ও আমার কথাটাই প্রমাণ করেছে। তাই ওকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’