গ্রামের নারীদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হয় কলাই ডালের বড়ি। তবে আগের মতো আর ব্যাপক হারে নেই। আসলে গ্রামে গ্রামে কমেছে বড়ি তৈরির উদ্দীপনা।
মাস কলাইয়ের ডাল ও চাল কুমড়ার সমন্বয়ে তৈরি এই খাদ্যপদটির জন্য নারীদের প্রস্তুতি দেখা যায় শীত মৌসুমের আরও দু’তিন মাস আগে থেকে। বড়ি প্রস্তুতের জন্যই অনেকে বাড়িতে চাল কুমড়ার চারা লাগান।
উৎপাদিত চাল কুমড়া সংরক্ষণ করে শীতের কোনো এক সুবিধাজনক সময়ে বাজার থেকে ঠিকরে কলাইয়ের ডাল সংগ্রহ করে গ্রামের নারীরা লেগে যান বড়ি তৈরির কাজে। এ যেন এক উৎসব। তৈরি করা বড়ি সংরক্ষণ করে রাখা যায় বছরজুড়ে। সারা বছরই বিভিন্ন তরকারির সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায় এটি।
এখন শীত মৌসুম। বড়ি তৈরির অন্যতম সময়। আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার এরশাদপুর গ্রামে বড়ি তৈরি করতে দেখা গেলো গৃহবধূ শাবানা খাতুনকে। তিনি জানান, বড়ি দেওয়ার জন্যই বাড়িতে চাল কুমড়ার চারা লাগিয়ে ছিলেন। তাতে বেশ ফলনও হয়েছে। পরে বাজার থেকে তিন কেজি ঠিকরে কলাই ডাল সংগ্রহ করেন তিনি।
বড়ি দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, চাল কুমড়া ভালো করে কেচে মিহি করে নিতে হয়। অন্যদিকে ডাল ভিজিয়ে মিহি করে বাটতে হবে। পরে কুমড়া ও ডাল মিশিয়ে খামির তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে অনুপাত হবে দুই কেজি ঠিকরে কলাই ডাল ও আড়াই কেজি চাল কুমড়া।
কুমড়া ও ডালের খামির হয়ে গেলে শুকনা পরিষ্কার কাপড় রোদে বিছিয়ে বা টাঙিয়ে তার ওপর ছোট্ট ছোট্ট করে বড়ি দিতে হবে। শুকিয়ে মচমচে হয়ে গেলে সংরক্ষণ করে প্রয়োজন মতো রান্না করে খাওয়া সম্ভব যে কোনো সময়।
কুমারী গ্রামের ছবিরন জানায়, আগে বাড়ি-বাড়ি বড়ি তৈরির উৎসব হতো। কিন্তু এই যুগে নারীদের মধ্যে সেই উৎসাহ বা আগ্রহ দেখি না। আবার চাল কুমড়া প্রাপ্তিও দুঃসাধ্য। সব মিলিয়ে বড়ি দেওয়ার রেওয়াজ কমে যাচ্ছে। তারপরও গ্রামের বেশ কিছু বাড়িতে এ বছর বড়ি তৈরি করতে দেখা গেছে।
-আলমডাঙ্গা প্রতিনিধি