বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানকে নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় রেল সংযোগ (কানেকটিভিটি) স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে। এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা, যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে কোনো সীমান্ত বাধা থাকবে না। ইউরোপের দেশগুলোর মতো কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই এক দেশের রেল আরেক দেশে পণ্য ও যাত্রী নিয়ে যেতে পারবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবিত ক্রস বর্ডার রেল যোগাযোগ প্রকল্পটি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরিষেবা কোম্পানি ডেলয়েট। কোম্পানিটির প্রতিনিধি দল বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ জানিয়ে চিঠিও পাঠিয়েছে।
ডেলয়েটের সিনিয়র কনসালটেন্ট রুশাভ শাহ সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাংকের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিশেষ করে বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান) অঞ্চলে আন্তসীমান্ত রেল পরিষেবার জন্য রোডম্যাপ তৈরির ওপর মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের সীমান্তবিহীন এই রেল পরিষেবা চালু হলে আন্তআঞ্চলিক বাণিজ্যের আরও বেশি প্রসার ঘটবে বলেও চিঠিতে জানানো হয়। কোম্পানিটির প্রতিনিধি দল এ বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, একটি সংস্থার প্রতিনিধি দল রেল কানেকটিভিটি নিয়ে অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে গেছেন। ইতোমধ্যেই ত্রিপুরা থেকে ঢাকা হয়ে কলকাতার মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আঞ্চলিক করিডর ছাড়িয়ে ভারত, নেপালের পাশাপাশি, চীন, পাকিস্তান, ইরান হয়ে ইউরোপ অবধি এই যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হলে সুফল পাওয়া যাবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রস্তাবিত রেল কানেকটিভিটি প্রকল্পটিকে- বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যে মোটরযান চলাচল চুক্তি (বিবিআইএন) তার অনুরূপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিবিআইএন চুক্তিতে ভুটান স্বাক্ষর করেনি। এছাড়া ভুটানে কোনো রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাও নেই। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রেল সংযোগ রয়েছে। নেপালের সঙ্গেও ভারতের রেল সংযোগ আছে।
এছাড়া ভারত ও নেপালের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত সংযোগের মাধ্যমে জয়নগর-বিজলপুরা-বারদিবাস রেললাইনের কুর্থা থেকে বিজলপুরা পর্যন্ত রেল সেকশন চালু হয়েছে। ফলে বর্তমান অবকাঠামো সুবিধা দিয়ে রেল কানেকটিভিটি চালু হলে বাংলাদেশ, ভারত, নেপালের মধ্যে ত্রিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন