চা-প্রেম এক সর্বজনীন বিষয়। মানুষের মধ্যে চা-প্রীতি কতটা গভীর, তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করার পর চা পান করাই যেন আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাস। সেই অভ্যাস যদি হঠাৎ ছাড়েন, কী হতে পারে শরীরে? জানলে চমকে উঠবেন।
চা পান করার পর আমরা যেন নতুন শক্তি পাই। এই শক্তির উপর ভর করেই সারাদিনের কাজ করি। আমাদের জীবনে চা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দিনে এক-দু’কাপ চা পান করার মধ্যে কোনও দোষ নেই। তবে বেশি পরিমাণ চা পান করলে তা আমাদের শরীরে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা তৈরি করতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে চা একেবারে বর্জন করাই কি ভাল? এক মাস চা না খেলে শরীরে কী ধরনের প্রভাব পড়বে? চলুন জেনে নিই-
চা সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়ার উপকারিতা
এক মাস চা না খেলে আমাদের শরীরে ক্যাফিন গ্রহণের মাত্রা কমে যায়। এর ফলে গভীর এবং উন্নতমানের ঘুম হয় এবং মানসিক চাপ কমে। চায়ের ডাইইউরেটিক প্রভাবের কারণে অতিরিক্ত চা পান আমাদের শরীরের পানিশূন্যতা তৈরি করে। তাই চা পান বন্ধ করলে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা কমে।
চায়ের পরিবর্তে কী পান করা যেতে পারে?
যদি আপনি চা পুরোপুরি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তবে চায়ের পরিবর্তে হার্বাল চা, ফলের রস, বা গরম জল পান করতে পারেন। ক্যাফিন-মুক্ত হার্বাল চা যেমন গাঁদা ফুল বা পুদিনার চা শরীরে অনেক ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আপেল বা ক্র্যানবেরি রসের মতো ফলের রস প্রাকৃতিকভাবে ক্যাফিনমুক্ত এবং শরীরকে সতেজ করতে সাহায্য করে। এছাড়া লেবু বা মধু মিশিয়ে গরম পানি পান করলেও চায়ের মতোই আরামদায়ক অনুভূতি পাওয়া যায়।
কারা চা একেবারে এড়িয়ে চলবেন?
কিছু মানুষকে একেবারেই চা পান করা উচিত নয়। যাদের পেট সংবেদনশীল বা হার্টবার্নের সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্যাফিন এবং ট্যানিনযুক্ত চা এড়ানো উচিত। অন্তঃসত্ত্বা মহিলা বা স্তন্যদানকারী মায়েদের চা সীমিত পরিমাণে পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ অতিরিক্ত চা শিশুর ক্ষতি করতে পারে।
যারা আয়রনের অভাবে রক্তাল্পতায় ভুগছেন, তাদের চা পান করা উচিত নয়। চায়ের ট্যানিন শরীরে আয়রন শোষণ বাধাগ্রস্ত করে, যা রক্তাল্পতা বাড়াতে পারে।
উল্লেখ্য, আপনার স্বাস্থ্য বিবেচনা করে দিনে কতটা চা পান করা যেতে পারে বা আদৌ চা পান করা উচিত কিনা, তা জানার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: যুগান্তর