মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি (কনসালটেন্ট) সোনিয়া আহমেদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর আদালতের বিজ্ঞ বিচারক স্বপ্রনোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মেহেরপুর আমলী আদালতের প্রথম শ্রেনীর ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, শরিয়ত উল্লাহ’র স্বপ্রণোদিতভাবে বিষয়টি আমলে নিয়ে এই মামলাটি করেন। বিজ্ঞ আদালতের বিশেষ নির্দেশের প্রেক্ষিতে নথি উপ¯’াপন করা হলো বলে উল্লেখ করেন তিনি। উল্লেখ্য, গত ১৪ মে/২০২২ ইং তারিখে মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকায় প্রথম পাতায় “ মেহেরপুরে চিকিৎকের নির্দেশিত ক্লিনিকে সিজার না করাই রোগীর প্রতি অবহেলা, ডা. সোনিয়া আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠণ” শীরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
গাইনী ও প্রসূতি (কনসালটেন্ট) ডা. সোনিয়া আহমেদের মনোনীত ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তার নির্দেশিত ক্লিনিকে না নেয়ায় রোগীর স্বজনদের উপর ক্ষিপ্ত হন এই গাইনী ও প্রসূতি (কনসালটেন্ট)। শুধু ক্ষিপ্তই হননি ডা. সোনিয়া আহমেদ। দিয়েছেন দেখে নেয়াসহ নানা ধরণে হুমকী।
২৫০ সয্যা বিশিষ্ট মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের গাইনী ও প্রসূতি (কনসালটেন্ট) ডা. সোনিয়া আহমেদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে তত্বাবধায়ক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন মোছা: খালেদা নামের এক প্রসূতি রোগীর স্বামী মো: হালিম নামের ভূক্তভোগী।
এঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠণ করে ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
২৫০ সয্যা বিশিষ্ট মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আশিষ দেবনাথকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার মোখলেচুর রহমান ও ডাক্তার শান্তনা (এনে¯’সিয়া)।
শনিবার থেকে এ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষে করে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগকারী মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের মো: হালিম জানান, আমার সন্তান সম্ভাবা স্ত্রী মোছা: খালেদাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সোনিয়া আহমেদের কাছে দেখানো হয়। ডা. সোনিয়া আহমেদ আমার স্ত্রী দেখার পর তার তত্ত্বাবধানে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজার করার পরামর্শ দেন। আমি অর্থনৈতিকভাবে অস্ব”ছল হওয়ায় তার নির্দেশিত ক্লিনিকে না গিয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালেই সিজার করার জন্য নিয়ে যায়।
সেখানে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালের নিয়ম মেনে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সোনিয়া আহমেদকে দিয়ে আমার স্ত্রী সিজারিয়ান অপারেশন করানো হয়। অপারেশন থিয়েটারে ঢোকার আগেই ডা. সোনিয়া আহমেদ আমাদের হুমকি দিয়ে বলে, তোদের দেখে নেব, তোরা ওপরে ফোন দিয়ে আমাকে দিয়ে জোর করে হাসপাতালে সিজার করা”িছস। আমি যে সিজার করাতে বললাম সেখানে করলি না, বাড়ি যা বুঝতে পারবি। সিজারের কিছুদিন পর থেকেই আমার স্ত্রী অসু¯’ হয়ে পড়েন। পেটে জ্বালা যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকে। পরে ডা. সোনিয়া আহমেদের কাছে পুনরায় নিয়ে গেলে ১৪ মার্চ তিনি আবারও হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে নেন। সিজারের ¯’ানে ইনফেকশন হয়েছে বলে জানান তিনি। পরে আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে পুনরায় অপারেশন করেন।দ্বিতীয়বার অপারেশন করার পর সেলাই না করে ১২ দিন হাসপাতালে রাখেন ডাক্তার সোনিয়া। আমাদের রোগীকে দেখার জন্য তাকে বারবার অনুরোধ করলেও দেখতে দেইনি সে। রোগীকে সেলাই না দিয়েই ফেলে রাখে তাকে। আমরা রোগীকে আল্ট্রাসনো করতে চাইলেও সে তা করতে দেইনি আমাদের। রোগীকে ছাড়পত্রও দেননি তিনি। অপারেশনের ১২দিন পর সেলাই করেন ডাক্তার সোনিয়া।