তাইওয়ানের সেনাবাহিনী নিজেদের সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ স্বশাসিত দ্বীপটির চারপাশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে তাইওয়ানের মন্ত্রিসভা।
বুধবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইপে সফরের প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ানে একের পর এক চীনের সামরিক মহড়ার ঘোষণা আসার পর এ পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। খবর রয়টার্সের।
তাইওয়ানের মন্ত্রিসভা আরও বলেছে, একটি জাতীয় স্থিতিশীলতা তহবিল স্টক মার্কেটের পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে এবং দরপতন হলে হস্তক্ষেপ করবে, তাই নাগরিকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।
চীনের হুশিয়ারি অগ্রাহ্য করে মঙ্গলবার রাতে তাইওয়ানে পা রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পেলোসি।
২৫ বছরের মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের কোনো স্পিকার এই প্রথম তাইওয়ানে গেলেন, যে দ্বীপটিতে চীন নিজেদের অংশ বলেই দাবি করে।
পেলোসি এশিয়ার সফরে তাইওয়ানে যাবেন, এমন খবর ফাঁস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেইজিং হুশিয়ার করেছিল— ওয়াশিংটন ‘আগুন নিয়ে খেলছে’।
কিন্তু তা উপেক্ষা করে পেলোসি তাইপেতে নামলেন। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে পেলোসিকে যখন হোটেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন হোটেলের বাইরে চীনের পক্ষে বিক্ষোভ চলছিল বলে বিবিসি জানিয়েছে।
পেলোসি তাইপেতে নামামাত্রই চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থার খবরে বলা হয়, তাদের ফাইটার জেটগুলো তাইওয়ান প্রণালির ওপর মহড়া দিয়েছে।
এর পর পরই দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং টুইট করে বলেন, আত্মরক্ষার জন্য এগিয়ে যেতে চীনকে বাধ্য করা হচ্ছে।
পেলোসির সফরের প্রতিক্রিয়ায় চীনের নেওয়া যে কোনো পদক্ষেপ এখন যৌক্তিকতা পাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। চীনের সামরিক বাহিনী তাইওয়ানসংলগ্ন উপকূলে সমরসজ্জা বাড়িয়েছে বলেও খবর এসেছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা দপ্তরের উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, মঙ্গলবার ২১টি চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা মঙ্গলবার রাত থেকেই তাইওয়ানের কাছে সর্বাত্মক সামরিক মহড়া পরিচালনা করবে। একই সঙ্গে তারা তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় সমুদ্রে প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষাও চালাবে।
তাইওয়ানের উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যৌথভাবে আকাশ ও সমুদ্রে চীনের ওই মহড়া চলবে। তাইওয়ান প্রণালিতে দীর্ঘ পাল্লার ‘লাইভ ফায়ারিং’ করা হবে।