চুয়াডাঙ্গায় মোটরযান চালকদের লাইসেন্স নবায়নের দাবীতে মানববন্ধন করেছে পেশাদার মোটরযান চালক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা শহরের একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পেশাদার মোটরযান চালকরা বলেন, পেশাদার চালকদের লাইসেন্স নবায়নের আবেদনের ফাইল বিআরটিএ অফিসে কয়েক বছর ধরে পড়ে আছে। আঙুলের ছাপ দিয়েও লাইসেন্স পাওয়া যাচ্ছে না। জন্ম তারিখ সংশোধন করে চালকদের লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য বিগত এক বছরে চারবার তারা মানববন্ধন করেছে। আঙুলের ছাপ দেয়া পেশাদার চালকদের লাইসেন্স তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা জন্ম তারিখের সঙ্গে অমিল থাকায় আঙুলের ছাপ দেয়া প্রায় ৫০ জন চালকের লাইসেন্স দীর্ঘদিন যাবৎ প্রিন্ট হচ্ছিল না। এরপর মানববন্ধন ও আন্দোলনের কারনে জন্ম তারিখ সংশোধন কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু যাদের কারনে মানববন্ধন করা হয়েছিলো, তাদের লাইসেন্সগুলো এখনও পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড প্রিন্ট হয়নি। ৪৭৭ নং স্মারকে ২০০১ সালে জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য একটি প্রজ্ঞাপন হয়েছিলো। এই প্রজ্ঞাপনের পরে জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য আরো একটি প্রজ্ঞাপন ২০১৬ সালে হয়েছিলো এবং মানববন্ধন ও আন্দোলনের পরে ২০২৩ সালে একটি অনুমোদন দেওয়া হয়। যে অনুমোদনের কারণে সমস্ত জন্ম তারিখ সংশোধন পূর্বক চালকদের লাইসেন্স প্রিন্ট করা হয়। কিন্তু যে সকল লাইসেন্স প্রিন্ট হতে বাকী ছিলো সেই সকল লাইসেন্সের একটি তালিকা সদর কার্যালয়ে ও অন্যান্য দফতরে প্রেরণ করা হয়েছিলো। উক্ত দপ্তরগুলো তালিকা চেয়ে তালিকা অনুযায়ী কাজ শেষ না করে তালিকাভুক্ত লাইসেন্সগুলো পূর্বে অনলাইন থেকে ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে রাস্তায় গাড়ি চালাতো এবং চালকরা তাদের জীবিকা অর্জন করতে রাস্তায় গাড়ি চালাতে প্রশাসনিক কিছুটা সুবিধা পেত। কিন্তু তালিকা দেয়ার পর উক্ত লাইসেন্সগুলো মনে হয় কোনো আক্রোশে রেফারেন্স রিমার্কে ফেলে দিয়েছে। সেই সঙ্গে জনগণকে ভুল বোঝানোর মতো প্রতারণা করা হয়েছে। যার কারনে এই লাইসেন্সগুলো অনলাইন কপি আর দেখা যাচ্ছে না। এই চালকদের লাইসেন্সগুলো যে রেফারেন্স রিমার্কে ফেলেছে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। যাদের ভলিউম ও রেকর্ড পরীক্ষা পাশের রেজুলেশন সব ঠিক আছে, জন্ম তারিখের জন্য চালকরা স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকের ছোট বড় স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
বিআরটিএ সদর কাযার্লয়ের দূর্ণীতিগ্রস্হ কর্মকর্তাদের অতিদ্রুত বদলী করা উচিত বলে চালকরা মনে করে। যে দেশে বৈধ চালকের চেয়ে অবৈধ চালকের সংখ্যা একেবারে কম না, সে দেশে বৈধ চালকদের লাইসেন্সগুলো সমস্যা সমাধান করে দিতে অসুবিধা কিসের ? মানববন্ধনে কয়েক দফা দাবীর মধ্যে যাদের নন স্মার্ট কার্ড লাইসেন্স ছিলো তাদের লাইসেন্স স্থানীয় বিআরটিএ অফিস থেকে ভলিউম ও রেকর্ড দেখে এক্সেল করার একটি সুযোগ প্রদান করেছিলো। কিন্তু ওই সুযোগটা কবে এসেছে আর কবে শেষ হয়েছে এটা বোধগম্য ছিলো না। এই নন স্মার্ট কার্ডগুলো এক্সেল করার মাধ্যমে লাইসেন্সগুলোর স্মার্ট কার্ড করার জন্য আবারো এক মাসের জন্য এই সুযোগটা প্রদান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নচেৎ সারা বাংলাদেশে এই সকল চালকদের পরিবার পরিজন নিয়ে রাস্তায় বসা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম.জেনারেল ইসলাম, ট্রাঙ্কলড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রানা ইসলাম।
মানববন্ধনে ছাত্র-ছাত্রী, চালক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, লেখক, নিরাপদ সড়ক চাই ও শ্রমিকরা অংশগ্রহণ করেন।