দেশের অন্যতম বড় খেজুর গুড়ের হাট বসে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জে। প্রতি বছর শীত মৌসুমে গাছিরা খেজুর গাছের রস থেকে গুড় তৈরি করে। ওই গুড় বিক্রি হয় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ গুড়ের হাটে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গুড় ব্যবসায়ীরা এখানে আসেন গুড় কিনতে। সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার হাট বসে এখানে।
চুয়াডাঙ্গার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় রয়েছে আড়াই লক্ষাধিক খেজুর গাছ। এ থেকে আড়াই হাজার মেট্রিকটন খেজুরের গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে কৃষি বিভাগের। শীত মৌসুমে গাছিরা এসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি শুরু করেন। গাছিদের উৎপাদিত সুস্বাদু খেজুরের গুড় বিক্রির জন্য নেয়া হয় সরোজগঞ্জ হাটে।
সরেজমিনে সরোজগঞ্জ গুড়ের হাটে দিয়ে দেখা যায় হাজার হাজার গুড়ের ভাড়। ব্যবসায়ীরা জানান, এবছর ১০/১২ কেজি ওজনের এক ভাড় গুড় বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়। সপ্তাহের শুক্রবার ও সোমবার এখানে গুড়ের হাট বসে। প্রতি হাটে ৩৫ থেকে ৪০ ট্রাক গুড় বেচাকেনা হয় এ হাটে। এ হাটের গুড়ের মান বেশ ভালো, তুলনামূলকভাবে দামও কম। এ কারণে দূর-দূরান্ত থেকে ব্যাপারীরা এ হাটে আসেন গুড় কিনতে।
সিরাজগঞ্জ জেলার গুড় ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি ১৫-১৬ বছর ধরে সরোজগঞ্জের এ হাটে আসি গুড় কিনতে। সিরাজগঞ্জ জেলাতে চুয়াডাঙ্গার গুড়ের বিশেষ চাহিদা রয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ হাটের ইজারাদার জাহিদ হাসান জানান, চুয়াডাঙ্গার খেজুরগুড়ের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, ভেজালমুক্ত গুড় তৈরি হয় চুয়াডাঙ্গায়। এজন্য চুয়াডাঙ্গার খেজুর গুড়ের কদরও বেশি। এ হাট থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা ও দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গার খেজুর গুড়।
তিনি আরো জানান, সরোজগঞ্জে সপ্তাহে অন্তত এক কোটি টাকার গুড় বেচাকেনা হয়ে থাকে। আগামি মার্চ মাস পর্যন্ত এ হাটে গুড় বিক্রি হবে।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আলী হোসেন বলেন, সরোজগঞ্জের খেজুরের গুড়ের জন্যই খেজুরগাছের যত্ন নিয়ে থাকেন এলাকার চাষীরা। জেলায় উৎপাদিত গুড় সহজে এবং বেশি দামে সরোজগঞ্জের হাটে বিক্রি করতে পারে চাষীরা। সরোজগঞ্জের হাটের গুড় চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
মেপ্র/আরজেএম
আরো পড়ুন –