চুয়াডাঙ্গার শহরের বড়বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষে তদারকিতে দু’ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার সময় এ প্রতিষ্ঠান দুটিতে তদারকি করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ জানান, সবজি বিক্রেতা, হোটেল, মিষ্টির দোকান, মুদি দোকানসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্রতিষ্ঠানে তদারকি করা হয়।
এসময় পুরাতন বাজারের গলিতে মেসার্স আর.এন. (রাম নিরঞ্জন) ট্রেডার্স নামক প্রতিষ্ঠানে তদারকিতে ভয়াবহ কিছু অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়। আটা ময়দাসহ বিভিন্ন পণ্যের মেয়াদ চলে যাওয়ার পরও সেগুলোর বস্তা ও প্যাকেটের ওপর লেখা মেয়াদ মুছে ফেলে পুনরায় বিক্রি করা হচ্ছিল। এছাড়াও বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত প্রচুর পরিমানে মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য জব্দ করা হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মুল্যতালিকাও টাঙ্গানো ছিল না। এসমস্ত অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির মালিক কিশোর কুমার আগরওয়ালকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৮, ৪৫ ও ৫১ ধারায় ২০ টাকা টাকা জরিমানা করা হয় এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য ও মেয়াদ মুছে ফেলা পণ্যগুলো জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
এরপর মেসার্স জলযোগ মিষ্টান্ন ভান্ডারে তদারকিতে আরও ভয়াবহ অনিয়ম দেখতে পাওয়া যায়। খুবই অস্বাস্থ্যকর নোংরা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে তৈরী হচ্ছে নানাবিধ খাদ্যপণ্য। মিষ্টি তৈরীর উপকরণ গুলোর মধ্যে পাওয়া যায় ইঁদুরের বিষ্ঠা। ফ্রিজে রাখা দইয়ের কাপে পাওয়া যায় সিগারেটের ছাই। কর্মচারীদের কোন স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। তৈরী করা দই ফ্রিজে রেখে বিক্রি করা হলেও মানা হচ্ছেনা মোড়কীকরণ বিধি (মেয়াদ মুল্য না লেখা)। বিভিন্ন লেখা কাগজ ও ছাপা কাগজের অস্বাস্থ্যকর ঠোঙায় বিক্রি করা হচ্ছে নানা রকম খাবার। পুর্বে সতর্ক করা স্বত্ত্বেও এসমস্ত অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপককে ৩৭ ও ৪৩ ধারায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় এক বস্তারও বেশী অস্বাস্থ্যকর ছাপা ঠোঙা জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
এসময় সব্জি বাজারসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে তদারকি করা হয়। সব ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয় এবং সবাইকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য কেনা-বেচার ভাউচার সংরক্ষণ ও মুল্যতালিকা প্রদর্শন করতে বলা ও সচেতনতামুলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। তদারকি কাজে সহযোগীতায় ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সদস্যরা।