চুয়াডাঙ্গায় একের পর এক ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি বা টপ সয়েল কেঁটে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটার মালিকেরা। এসব টপ সয়েল পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে ইট। বাড়তি টাকার লোভে কৃষকেরাই টপ সয়েল বিক্রি করছেন ভাটা মালিকদের কাছে। এতে নষ্ট হচ্ছে উর্বর জমি। কমে আসছে ফসলের উৎপাদন। এক শেণির মাটি ব্যবসায়ী কৃষকদের পুকুর খনন করে মাটি বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে এসব ফসলি জমি নষ্ট করছে। এসব বন্ধে জেলা প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
স্থানীয়রা জানায়, বর্তমানে ইটভাটায় ইট তৈরীর ভরা মৌসুম। জেলার চার উপজেলায় বৈধ অবৈধ মিলে শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটায় ইট তৈরীর জন্য ভাটা মালিকেরা কৃষকের জমির মাটি কেঁটে নিয়ে যায়। গ্রামের কৃষি জমিতে মেশিন দিয়ে দশ ফুটের বেশী গভীর করে চলে মাটি কাটার উৎসব। মাটি ব্যবসায়ীরা অনেক সময় পুকুর খননের নামে মাটি কিনে ইটভাটায় বিক্রি করে। শুধুমাত্র কৃষকের ব্যক্তিগত জমিই নয় ইটভাটায় মাটি ব্যবহারের জন্য খনন করা হচ্ছে সরকারী জমিও।
আলমডাঙ্গা উপজেলার কৃষক বারী শেখ জানান, ফসলি জমির প্রতি বিঘা ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে ৫ থেকে ১০ বছর মেয়াদে চুক্তিনামা করে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে মাটি ব্যবসায়ীরা। কৃষকের জমির সেই মাটি প্রতি গাড়ি (ট্রাক্টর) সাতশ থেকে হাজার টাকায় জেলার বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রয় করে তারা।
রুহুল অমিন নামের দামুড়হুদা উপজেলার এক কৃষক জানান, মাটি ব্যবসায়ীরা একটি ফসলি জমির মাটির কেটে নিয়ে যাওয়ায় পশের জমির মাটি ধসে পড়ে। যার কারণে পাশের জমির কৃষকের ফসল উৎপাদনে বিভিন্ন সমস্যা হয়। ফলে বাধ্য হয়েই সেই কৃষকও জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন ইটভাটায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলার মাটি অত্যন্ত উর্বর। এখানে সব ধরণের ফসলের আবাদ হয় নির্বিঘ্নে। কৃষকের অজ্ঞতার কারণে জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষক নিজেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানান, ফসলী জমিতে মাটি কাঁটা বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে অনেক ইটভাটার মালিককে জরিমানসহ অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মাটি কাঁটার বিষয়ে সুনিদিষ্ট তথ্য দিলে সাথে সাথে জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান তিনি।
আরো পড়ুন-চুয়াডাঙ্গায় কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিলো জেলা পুলিশ