চুয়াডাঙ্গায় নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে উদযাপন করা হলো মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ।
গতকাল রবিবার সকালে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনভর নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করে। সকাল ৬ টায় চুয়াডাঙ্গা শহীদ হাসান চত্বর ৩১বার তপোধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভসূচনা করা হয়।
সূর্যোদয়ের সাথে শহীদ হাসান চত্বর শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ও জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর পরই শহীদ হাসান চত্বর শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তর্পক অর্পণ শুরু হয়। প্রথম প্রহরে সকাল ৬টার কিছুক্ষণ পর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান পুষ্পার্ঘ্য নিবেদনের মাধ্যমে শহীদ বেদি উন্মুক্ত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আরাফাত রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কবির হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শামীম ভূইয়াসহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ।
এরপর চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন এর নেতৃত্বে পুষ্পমাল্য অপর্ণ করে জেলা পুলিশ বিভাগ। সাথে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্না বিশ্বাসসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বত কর্মকর্তারা। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্যদের সঙ্গে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাবেক জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হোসেন।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. একেএম সাইফুর রশিদের নেতৃত্বে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আজিজুর রহমানসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এরপর, স্বাস্থ্য বিভাগ, চুয়াডাঙ্গা পৌর পরিষদ, সদর উপজেলা প্রশাসন, মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা অফিস, জেলা যুবলীগ, জেলা ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, অঙ্গসহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি, ব্যাংক-বীমা, স্বায়ত্ব শাষিত প্রতিষ্ঠান, স্কুল এদিন সকল সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সন্ধায় ডিসি সাহিত্য মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।
পুরাতন স্টেডিয়ামে সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ সকাল ৮টায় জেলা স্টেডিয়াম মাঠে (পুরাতন) সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত উচ্চারণের মধ্যদিয়ে দিনের ২য় পর্যায়ের কর্মসূচী শুরু হয়। জাতীয় সংগীতের তালে তালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে সাথে নিয়ে শান্তির প্রতীক শ্বেতকপোত ও রঙিন বেলুন অবমুক্ত করে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এরপর প্যারেড কমান্ডার চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনের আরআই এর চৌকস প্রহরায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক স্টেডিয়ামে আগত ও জেলার সকলের উদ্দেশ্যে দেশের মহান স্বাধীনতা, স্বাধিরতার সুবর্ণজয়ন্তী ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে সুখি, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার নিশ্চিত করে দেশ গড়ার আহবান জানিয়ে প্রাণবন্ত ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তে ও ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি লাল-সবুজ পতাকা ও স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো নিপীড়িত-নির্যাতিত জর্জরিত মানুষের এ দেশটি যেন প্রীতির আবহে পূর্ণ হয়ে সুস্থ মানবতার আবাসভূমি হয়ে উঠতে পারে এবং সেই পরিবেশে বেড়ে ওঠে নতুন প্রজন্ম যেন পরিপূর্ণতার আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে বিশ্বময় বিশ্বমানবতার জয়গানে মুখর হয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও ভাষণে বেশ কিছু ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন জেলা প্রশাসক।
অনুষ্ঠান মঞ্চে এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. একেএম সাইফুর রশিদ, চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আজিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আরাফাত রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কবির হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্না বিশ্বাস, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শামীম ভূইয়াসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ।