চুয়াডাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারি শিক্ষক শাকিল আরাফাতের বিরুদ্ধে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার সময় চুয়াডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থীরা মিলিত হয়ে এই মানবন্ধন করে। বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শাকিল আরাফাত শিক্ষার্থীদের প্রতি কুদৃষ্টিতে তাকানো, শ্লীতাহানি করা, হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে সঠিত বিচারের দাবিতে এই মানবন্ধন করে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।
এসময় মানবন্ধন করতে করতে চুয়াডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ে থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান নেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষকের বিচারের দাবিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার বরাবর একটা স্মারকলিপি প্রদান করেন। এরপর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থানের সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা চাই এই শিক্ষকের দীর্ঘ মেয়াদের সাজা হোক। এরপরে যেন কোনো শিক্ষার্থীর এই কুদৃষ্টিতে তাকানো, শ্লীতাহানি করা, হুমকি দিতে না পারে সেজন্য এই শিক্ষকের কঠিন বিচার চাই। এই শিক্ষক শাকিল আরাফাত প্রতিনিয়ত আমাদের সহপাঠিদের কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। অনেক শিক্ষার্থীকে ভয় দেখিয়েও খারাপ কাজ করতে বাধ্য করেছে। এখন আমাদের মুখ খুলার সময়। অনেকে ভয় আর লজ্জার কারণে মুখ খুলতেও পারিনি অনেক শিক্ষার্থী। তাই এইরকম যেন না হয় শিক্ষার্থীদের আর সেজন্য এই শিক্ষকের কঠিন শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে । কঠিন শাস্তির আওতায় না নিয়ে আসলে মানবন্ধন অব্যাহত থাকবে।
পরে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা শিক্ষার্থীদের মানবন্ধনের সামনে এসে বলেন, চুয়াডাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারি শিক্ষক শাকিল আরাফাতের ইতিমধ্যে আইনের আওতাই নিয়ে আসা হয়েছে। এ সময় তিনি আরও বলেন তার অপরাধের জন্য তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে। এই আশ্বাস কথা শোনার পর শিক্ষার্থীরা তারা তাদের মানবন্ধন স্থল ছেড়ে চলে যায় তাদের শ্রেণি কক্ষে।
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ওই বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক শাকিল আরাফাতকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার বিকেলে ওই শিক্ষার্থীর বাবা চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় গিয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। গ্রেফতারকৃত শিক্ষক শাকিল আরাফাত ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ফরাশপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। গত ৪ আগষ্ট অন্যান্য দিনের মতো ব্যাচে পড়তে যায় ওই শিক্ষার্থী। পড়া শেষ হলে ছুটির সময় শিক্ষক শাকিল ওই শিক্ষার্থীকে জানান- স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্রীদের পরীক্ষার খাতা তাকে একটু দেখে দিতে হবে। সেজন্য পরের দিন সকালে সে যেন তার বাসায় সকালে আসে।
শিক্ষকের কথা মতো ওই শিক্ষার্থী পরের দিন শিক্ষক শাকিলের বাড়িতে যায়। বাড়িতে কেউ না থাকায় কথার কৌশলে ওই শিক্ষার্থীকে বেডরুমে নিয়ে বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিতে থাকে শিক্ষক শাকিল। অনেক শিক্ষার্থীকে ভয় দেখিয়েও খারাপ কাজ করতে বাধ্য করেছে। ওই সময় ওই শিক্ষার্থীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় অভিযুক্ত শিক্ষক। এসময় ওই শিক্ষার্থী শিক্ষক শাকিলকে তার এমন অনৈতিক কার্যকলাপে বাধা দেয়। একপর্যায়ে শিক্ষককে ধাক্কা দিয়ে তার বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় ওই শিক্ষার্থী।