চুয়াডাঙ্গা জেলার ইলেক্ট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সকল সাংবাদিকের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারোটার সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের আয়োজনে পুলিশ লাইন্স ড্রিল শেডে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা নবাগত পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান পিপিএম- সেবা।
মতবিনিময় সভার শুরুতে জেলার সকল সাংবাদিকের সাথে কুশল বিনিময় করেন নবাগত এই পুলিশ কর্মকর্তা।
বক্তব্যের শুরুতে নবাগত পুলিশ সুপার বলেন, গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বাংলাদেশের প্রাণপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও জাতির পিতার পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার সকলকে। আমি আমাদের চার জাতীয় নেতাকে স্মরণ করছি। যাদের আমাদের জাতির জন্য অপরিসীম অবদান ছিল।
পুলিশ সুপার পদটি আমি জেলা পুলিশের প্রধান হিসেবে নয়, বরং আমি গ্রহণ করেছি রাষ্ট্রকর্তৃক প্রদত্ত সুমহান দায়িত্ব হিসেবে। চুয়াডাঙ্গার জনগনের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ এবং আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে জেলা পুলিশ সদস্যদের চেষ্টা চলমান সেই বিশাল কর্মক্ষেত্রের একজন সদস্য হতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি এবং আমাকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
তিনি আরোও বলেন, চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার হিসেবে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব মেধা-মনন, সততা এবং নিষ্ঠার সাথে পালন করতে আমি দৃঢ প্রতিজ্ঞ। এই জেলার সম্মানিত নাগরিকবৃন্দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অধিকতর সেবা প্রদান হবে আমার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। কুইক রেসপন্স এবং সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা জেলার ৫টি পুলিশ স্টেশন হবে আইনী সেবা প্রত্যাশীদের নির্ভরতার কেন্দ্রবিন্দু।
সাংবাদিক সমাজের দর্পন। রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ। জনবল ও লজিস্টিকস স্বল্পতার কারণে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে লুকিয়ে থাকা সকল অপরাধ আর অপরাধীর খোঁজ পাওয়া পুলিশের একার পক্ষে দুঃসাধ্য। আপনাদের লেখনির মাধ্যমেই কেবল পুলিশ সমাজ বিরোধী কাজের পুঙ্খানুপুঙ্খ খোঁজ পেতে পারে। পুলিশ এবং সাংবাদিক পরস্পরের সহযোগী বন্ধু হিসাবে সত্যের সন্ধানে কাজ করে। পুলিশকে সমাজের আনাচে- কানাচে ঘটে যাওয়া অপরাধের সঠিক তথ্য দিয়ে সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ পুলিশকে সহযোগিতা করবেন এটাই আমার প্রত্যাশা।
অসীম সাহসিকতা, বীরত্ব, আত্মত্যাগের ইতিহাসকে ধারণ করে সেবার সুমহান ব্রত নিয়ে আমি এবং আমার টিম আপনাদের সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আমার চাকরির অভিজ্ঞতা, মেধা এবং প্রচেষ্টার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে সচষ্টে থাকব। আপনাদের সহযোগিতায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং নির্বাচন আচরণ বিধিমালা মোতাবেক পুলিশের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করতে বদ্ধপরিকর। রাষ্ট্র, সংবিধান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে আমরা দেশপ্রেম, পেশাদারিত্ব, সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের এই দীপ্তপদের যাত্রায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।
উক্ত মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রিয়াজুল ইসলাম, সহকারি পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচি, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ্যাডভোকেট মানিক আকবর, সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহাম্মেদ, প্রথম আলো জেলা প্রতিনিধি শাহ্ আলম সনি , ডিআইও-১ ডিএসবি আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান, চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাব্বুর রহমান সহ জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ ও জেলা পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসারগন।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান চুয়াডাঙ্গা।