প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর, ডাক্তার ও জনবলসহ ২৫০শয্যার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ চালুর দাবীতে আমরন অনশন করছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটার সময় উক্ত অনশনে শুরু হয়।
এ সময় উপস্থিত বক্তারা বলেন চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসীর জন্য স্ব্যাস্থ্য ব্যবস্থার একমাত্র ভরসা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল। কিন্তু এ হাসপাতালে ডাক্তার ও বেড সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে দিনের পর দিন। ২০০৩ সালে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল। খাতা কলমে ১০০ শয্যায় রুপ নিলেও সেই ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে কোনরকমে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে হাসপাতালটি। এতে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে মারত্মক হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও দেখা পাচ্ছেন না চিকিৎসকের।
সদর হাসপাতালে ৪২টি পদের মধ্যে চিকিৎসকের স্থলে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১৭ জন। ২৫টি পদ শূন্য রয়েছে। হাসপাতালের বাইকেমিস্ট্রি পরীক্ষা করার মেশিন নষ্ট হয়ে আছে। এর ফলে গুরুত্বপূর্ন পরীক্ষাসহ বিভিন্ন টেস্ট রোগীদের বাইরে থেকে করে আনতে হচ্ছে। ১৯৭০ সালে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। জনসংখ্যার সাথে সাথে রোগীর চাপও বেড়ে যাওয়ায় ২০০৩ সালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। শয্যা সংখ্যা নামমাত্র বাড়লেও হাসপাতালটিতে ডাক্তার, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। ডাক্তার সংকটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীদের বসে থাকতে হয় হাসপাতালের বাইরে। রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যর প্রচেষ্টায় ২০১১ সালের প্রায় সাড়ে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ বেডের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ শুরু করে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০১৬ সালে থাকলেও কাজ শেষ হয়নি। ২০২১ সালে করোনা ভয়াবহ দেখা দিলে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম ২৫০ বেডের উদ্বোধন করেন। এদিকে জনবল সংকটের কারণে এত রোগীর চাপ সামাল দিতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে ওয়ার্ড নার্সদের।
প্রতিটি ওয়ার্ডে ১৫-২০ টি বেড রয়েছে সেই তুলনায় প্রতিদিন একেকটি ওয়ার্ড থেকে শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এতে করে ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। বেড না পাওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসক ও ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে রোগীদের। অনেকে ঘন্টার পর ঘন্টা হাসপাতালের বারান্দায় অপেক্ষা করে চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিটা বিভাগেই জনবলের সংকট রয়েছে। এতসব সমস্যার কারণেই ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।
২৫০ শয্যা হাসপাতালটি সম্পূর্ণ চালু হলে রোগী সাধারণের দূর্ভোগ কমবে।
এছাড়া এখানে ব্যবহার উপযোগী এ্যামবুলেন্স নেই। জরুরি প্রয়োজনে কখনো এ্যামবুলেন্স পাওয়া যায় না।এ দাবি কোন ব্যক্তি বা সংগঠন কেন্দ্রীক নয়। দলমত নির্বিশেষে এটা চুয়াডাঙ্গাবাসীর প্রাণের দাবি। সেকারণে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের ব্যানারে এই আমরন অনশন চলবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরন অনশন চলবে।
উপস্থিত আছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহবায়ক ভাইস গরীব রুহানি মাসুম,চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সদস্য সচিব বখতিয়ার হোসেন জোয়ার্দার,বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক বায়েজিদ রহমান জোয়ার্দার, যুগ্ন আহবায়ক আলিফ জোয়ার্দার,চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা সদস্য দারুল ইসলাম,সদর উপজেলা আহবায়ক আকরামুল হক কামাল,সদর উপজেলা সদস্য সচিব শাহজাহান আলী, পৌর আহবায়ক সোহেল রানা পৌর সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন নিয়তি,কুতুবপুর ইউনিয়ন আহবায়ক আঃ হান্নান,পদ্মবিলা ইউনিয়ন সদস্য সচিব আলী হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক আজাদ আলী শেখ,মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন আহবায়ক বিশারত আলী, শংকরচন্দ ইউনিয়ন যুগ্ম আহবায়ক কামাল হোসেন লাভলু মিয়া আশরাফুল ইসলাম সহ ডিঙ্গেদহ দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক শফি উদ্দীন সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের নেতৃবৃন্দ।