জৌলুস হারানো বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এর ঝিনাইদহ অফিসটি এখন ডেডহর্স। আগের মতো কোলাহলমুখর পরিবেশ নেই অফিসে। নিয়োগ বন্ধ দীর্ঘদিন, তাই জনবলের অভাবে কাজে গতি নেই। এদিকে লোকবলের আভাবে টেলিফোন গ্রাহকরা বাড়িতে বিল পাচ্ছেন না।
আবার কেউ পেলেও অন্যদিকে দক্ষ কারিগরের অভাবে দ্রুত গতির ইন্টারনেট জি-ফোন সেবা মুখথুবড়ে পড়েছে। এতে দিনকে দিন গ্রাহক সংখ্যা কমে নিম্ন পর্যায়ে পৌচেছে। টেলিফোন সেবা থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সবমিলিয়ে ঝিনাইদহ বিটিসিএল অফিসটি নানা সমস্যায় জর্জরিত।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলায় একসময় কয়েক হাজার টেলিফোন লাইন ছিল। ছিল ইন্টারনেট সুবিধা। এক সময় মানুষ টেলিফোনের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল। অফিসগুলো ছিল উৎসবমুখর। বাসাবাড়িতে টেলিফোন লাইন থাকা আভিজাত্যের প্রতিক হিসেবে দেখা হতো। আর এখন সরকারী টেলিফোন দেখলে মানুষ ভর্সনা করেন। এর প্রধানতম কারণ হলো দেশে সেলুলার ফোন চালু হলে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারেনি একমাত্র সরকারী প্রতিষ্ঠান বিটিসিএল।
টেলিফোন লাইন কমতে কমতে এখন ঝিনাইদহ জেলায় ১২৭৪টি সংযোগে এসে ঠেকেছে। এরমধ্যে আবার জি-ফোন ইন্টারনেট সংযোগ আছে ৬০০টি। চব্বিশ ঘন্টা সেবা না থাকায় জি-ফোনের উপরও মানুষ বিরক্তি হয়ে পড়ছে। জি-ফোনের ইন্টারনেটের সমস্যা দেখা দিলে কাউকে পাওয়া যায় না। অথচ বেসরকারী ইন্টারনেট লাইনের সেবা পাওয়া যায় সব সয়।
ঝিনাইদহ বিটিসিএল অফিস সুত্রে জানা গেছে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মাত্র তিনজন কর্মকর্তা ঝিনাইদহ অফিসে কর্মরত আছেন। তাদের চাকরির বয়স শেষে হলে ওই পদও বিলুপ্ত হবে। বিটিসিএল এখন প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রন করছে। ঝিনাইদহ অফিসে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) কর্মকর্তা কর্মচারির সংখ্যা মাত্র ১৩জন। উপজেলা পর্যায়ে বিটিসিএলের অফিস ও সম্পদ পাহারায় মাত্র একজন, কোন কোন অফিসে দুইজন করে কর্মরত আছেন। ফলে গ্রাহকদের সেবা পৌঁচেছে শুন্যের কোঠায়।
এই অল্প সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারি দিয়ে ধীরগতিতে চলছে অফিসটি। এসএম বিল্লাহ নামে এক টেলিফোন গ্রাহক অভিযোগ করেন ৮ বছর আগে তিনি তার প্রতিষ্ঠানের টেলিফোন লাইন সারেন্ডার করেছিলেন। এই সময়ের মধ্যে অফিস থেকে সারেন্ডারকৃত লাইনের কোন বিল আসেনি। ফলে তিনি ধরে নিয়েছিলেন আবেদনের প্রেক্ষিতে তার লাইন সারেন্ডার হয়েছে।
কিন্তু সম্প্রতি সারেন্ডারকৃত ওই লাইনের ৮ বছরের বিল একসঙ্গে তাকে প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া তার দুটি জি-ফোন সংযোগ থাকলেও বাড়িতে টেলিফোন বিল পৌছায় না। এ নিয়ে তিনি খুবই বিড়ম্বনায় আছেন।
উপ-শহরপাড়ার গ্রাহক মিনারা পারভিন জানান, তার বাড়িতে নিয়মিত বিল না পৌছানোর কারণে একসঙ্গে বিল দিতে তার কষ্ট হয়। ব্যাপারীপাড়ার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জি-ফোন গ্রাহক বলেন, তার বাড়িতে কোন বিলই দেওয়া হয় না।
এবিষয়ে ঝিনাইদহ বিটিসিএলের এ্যসিসটেন্ট ম্যানেজার পল্লবী ঘোষ জানান, অফিসের জনবল সংখ্যা সঠিক ভাবে আমার জানা নেই। এটা যশোর থেকে জানতে হবে। জনবল সংখ্যা পুরণ হলে বেশির ভাগ সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি জানান।