মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তাজউদ্দীন খান বলেন, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী চাই, ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে। বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়তে ও এদেশের পরিবর্তনের জন্য আরও ত্যাগ করার প্রয়োজন হলেও জামায়াত সেই ত্যাগ করবো। এদেশের পরিবর্তন আনতে জামায়াতের সকল নেতাকর্মীদের মাঠে নামতে হবে।
গতকাল শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গাংনী উপজেলা বামুন্দী ইউনিয়নের উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বামন্দী ইউনিয়ন জামায়তের আমীর মাওলানা মোঃ আবুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শিক্ষক ফেডারেশনের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক রবিউল ইসলাম।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মেহেরপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোঃ ইকবাল হোসেন, গাংনী উপজেলা জামায়াতের আমীর ডাঃ মোঃ রবিউল ইসলাম, জেলা জামাায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা, জেলা মসজিদ মিশনের সভাপতি মাওলানা আব্দুল মজিদ, গাংনী উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা মফিজুর রহমান, গাংনী পৌর জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, মটমুড়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান সংগ্রাম, জেলা ওলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম জিহাদি প্রমুখ
কর্মী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আহসানুল হক, উপজেলা জামায়াতের বাইতুল মাল সম্পাদক মোহাম্মদ সামসুল হুদা, বামন্দি ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুস সালাম, তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়ন আমীর মাওলানা মতিউর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা তাজ উদ্দীন খান আরও বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর একটা দু:শাসনের মধ্যে থেকে এদেশের মানুষের তাদের জীবন অতিবাহিত করতে হয়েছে।
ছোট এই জেলায় স্বাধীনতার পর থেকে রাজনীতির মাঠে থেকে জীবন দিতে হয়েছে এমন ইতিহাস নেই। অথচ, বিগত ১৭ বছরে রাজনীতির করার কারনে জামায়াত, শিবিরের ৫ জনকে জীবন দিতে হয়েছে। বিগত স্বৈরচারী সরকার এই জেলায় জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৮৬ টি মামলা দিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১ হাজার নেতাকর্মীকে। জামায়াতের নারী কর্মীদের বিরুদ্ধে ১৪ টি মামলা দেওয়া হয়েছে। ১০০ জন নারী সদস্যকে গ্রেফতার করে কারাগারে দিয়েছে, রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে তাদের সেলে পর্যন্ত রাখা হয়েছে। ১৭ টি বছর আমাদের জন্য একটা দু:শাসন ছিল।
তিনি বলেন, দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীর পরে ভারত চিন্তা করছে বাংলাদেশে আমাদের আধিপত্য বিস্তার করতে হলে, দেশ প্রেমিক একটা দল জামায়াত ইসলামীকে ক্ষতম করতে হবে। সেই কারণেই তাদের চক্রান্ত বাস্তবায়ন করেছে স্বৈরাচার হাসিনা।
মাওলানা তাজ উদ্দীন বলেন, বিগত ৪৫ বছর আওয়াজ শুনলাম না আমরা রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধী, নারী ধর্ষণকারী ছিলাম। আমরা ঘরবাড়ি জ্বাঁলাও পোঁড়াও করেছি। তারা ১৭ বছর যাবৎ জামায়াতের বিরুদ্ধে অপবাদ চালিয়েছে। তাঁরা এই অপবাদ চাপাতে রেডিও, টেলিভিশন, প্রিন্ট মিডিয়াকে ব্যবহার করেছে, ব্যবহার করেছে প্রশাসনকে। তাঁদের সেই মিথ্যাচার এদেশের মানুষ যদি একভাগও বিশ্বাস করতো তাহলে আমরা (জামায়াত) এই দেশে থাকতে পারতাম না।
তিনি উল্লেখ করেন, গাংনীর এক লেখক মেহেরপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি বই লিখেছে। সেখানে ৩২০ জন রাজাকারের লিষ্ট দিয়েছে। সেই বই নিয়ে আমরা মাঠে খোঁজ নিয়ে দেখেছি রাজাকারদের ৮০ ভাগ লোক আওয়ামীলীগ দলের নেতাকর্মী। বাকীরা অন্যদল করে আর জামায়াত ইসলাম দল করে মাত্র দুইটি পরিবার। এই অপবাদ ছিল জামায়াতের জন্য। ২০২৪ সালের ছাত্র জনতা এই কথাটা গর্বের সাথে গ্রহণ করেছে। রাজাকর শব্দটি যদি দিতে হয় এদেশের ১৮ কোটি জনতার সাথে আমরা নিজেদের রাজাকার দাবী করছি। এতদিন যে অপবাদ জামায়াতের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে ২০২৪ সালে সেটাই মানুষের কাছে গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।