প্রতিটি মাঠের ক্ষেতের আইলে, রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়ের অযত্নে, অবহেলায় বেড়ে ওঠা খেজুরের গাছ জীবননগর উপজেলার অর্থনীতিতে আর্শীবাদ।
শীত মৌসুমে রস-গুড় উৎপাদন করে প্রায় ৬ মাস স্বাচ্ছন্দ্যে জীবিকা নির্বাহ করে উপজেলার কয়েক হাজার পরিবার। খেজুরের রস, গুড় ও পাটালি উৎপাদনে প্রসিদ্ধ উপজেলা জীবননগর। দেশের বাইরেও এর বেশ কদর রয়েছে। আসছে শীত, রীতিমত ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা। উপজেলার সবখানেই শুরু হয়েছে খেজুর রস সংগ্রহের কর্মযজ্ঞ।
গাছিরা খেজুর গাছের ডাল-পালা পরিষ্কার করাসহ যাবতীয় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পুরোদমে। দিন দশেক পরেই মিলবে রস, গুড় ও পাটালি। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয় এ উপজেলার গুড়-পাটালি।
উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের গাছি আজিজ মিয়া জানান, একশ খেজুর গাছ প্রস্তুত করেছেন এবার। এর থেকে রস-গুড়, পাটালি বিক্রি করে প্রায় ৬ মাস সংসার চলে যাবে তার।
একই এলাকার গাছি হযরত আলী জানান, রস সংগ্রহে গাছে ভাঁড় (মাটির তৈরীর পাত্র) বাঁধার আগে প্রতিদিন ভাঁড়গুলো ধুয়ে নিয়ে আগুন দিয়ে পোড়া দিই। সেই সাথে খেজুরের পাতা দিয়ে ভাঁড় ঢেকে দিই। এভাবে প্রতিদিন রস সংগ্রহ করি। এ ছাড়াও গুড়-পাটালি করার সময় কোন কেমিক্যাল মেশানো হয়না।
জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, বাঁদুড়ের মাধ্যমে খেজুর রসে নিপাহ ভাইরাস ছড়ানোর আশংকা থাকে।
এ জন্য গাছিরা যে পাত্রে রস সংগ্রহ করবে সেটা যেন ভাল করে ঢেকে রাখে। যেন বাঁদুড় বা অন্য কোন প্রাণী রস ছুতে না পারে। ভোক্তারা যাতে স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে প্রস্তুত খেজুরের রস-গুড় পেতে পারে এজন্য কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।