জীবননগর শহরের টিন ব্যবসায়ী হক মেশিনারি’র স্বত্বাধিকারী হাজী সাইদুল হক ও তার ছোটভাই সাইউল হকের বিরুদ্ধে দোকান থেকে ২ হাজার টাকা চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দোকানের ম্যানেজার খলিল মিজিকে নির্মম ভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
আহত দোকান ম্যানেজারের স্ত্রী বাদি হয়ে জীবননগর থানায় সোমবার রাতে লিখিত অভিযোগ দিলে রাতেই নির্যাতনকারী সাইদুল হককে গ্রেপ্তার করেন জীবননগর থানা পুলিশ।
আহত ম্যানেজার খলিল মিজি (৫৫) জীবননগর উপজেলার পিয়ারাতলা গ্রামের মৃত আবেদ আলীর ছেলে
আহত খলিল মিজি বলেন, আমি দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর ধরে জীবননগর শহরের টিন ব্যবসায়ী হাজী সাইদুল হকের দোকানে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে আসছি। প্রতিদিনের মতো রোববার সকালে আমি দোকানে গিয়ে খাতা-পত্র নিয়ে হিসাব নিকাশের কাজ করতে থাকি। হঠাৎ দোকানের মালিক হাজী সাইদুল হক ও তার ছোটভাই সাইউল হক আমাকে গিয়ে বলে মার্কেট থেকে বাকির আদায় করা কালেকশনের টাকা থেকে দুই হাজার টাকা কম হচ্ছে। আমি তখন তাদেরকে জানাই, আমি আমার পাওনা বেতনের টাকা থেকে আমার নামে খরচ লিখে পাঁচশত টাকা নিয়েছি। কম হওয়া টাকা সম্পর্কে আমার জানা নাই।
যে মার্কেট থেকে কালেকশন করেছে তাকে জিজ্ঞাসা করতে বললে, তখন তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে কাঠের বাটাম দিয়ে মারপিট করতে থাকে । এভাবে তারা দুই ভাই আমাকে দোকানে আটকিয়ে রেখে পর্যায়ক্রমে দুপুর তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অমানবিক নির্যাতন করতে থাকে আর আমাকে এই মিথ্যা চুরির কথা স্বীকার করতে বলে। একপর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আমার বাড়িতে খবর দিয়ে আমার স্ত্রী আসলে ভ্যান যোগে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় এবং এই কথা কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়।
আমি আমার স্ত্রী কলেজ পড়ুয়া কন্যা সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে লোকলজ্জা ও হাজী সাহেবদের ভয়ে কাউকে বিষয়টি জানায়নি বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিতে থাকি। আজ আমার শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে আত্মীয়স্বজনরা জীবননগর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। আমি আমার উপর মিথ্যা চুরির অপরাধ দিয়ে অমানবিক নির্যাতনের বিচার চাই। আমি যদি চোর হতাম তাহলে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজার হিসেবে কিভাবে চাকরি করে আসছি ? আমি তাদের এখানেই ৬ বছর ধরে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করছি।
এ ব্যাপারে জীবননগর থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, আহত খলিল মিজির স্ত্রী বাদী হয়ে জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে হাসপাতালে তাৎক্ষণিক পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে ভিকটিমের শারীরিক অবস্থা খোঁজ নিয়ে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে নির্যাতনকারী ব্যবসায়ী সাইদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়।