জীবননগর রায়পুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ১২ লক্ষ টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন নাহারের বিরুদ্ধে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার সময় জীবননগর উপজেলার রায়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের আয়োজনে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ১২লক্ষ টাকা আত্মসাত এবং শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন নাহারকে বিদ্যালয় থেকে অপসারন করাসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রায়পুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি বিগত সময়ে ব্যাপক সুনামের সাথে পরিচালিত হত। এই বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে দেশের বিভিন্ন স্থানে চাকুরী করছে। নাহার মাস্টার গত এক বছর ধরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান একেবারে কমে গেছে।
পাশাপাশি ক্ষমতার দাপটে বিদ্যালয়ের উন্নয়মূলক কাজের ২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা তিনি আত্মসাত করেছে। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের সামনে ৪২টি দোকান বরাদ্দ দিয়ে সেখান থেকে অগ্রিম ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও দোকানের ভাড়া বাবদ ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে।
রায়পুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র তৌফিক বলেন, আমাদের স্কুলের লেখাপড়ার মান অনেক ভালো ছিলো। বর্তমান শিক্ষকদের দ¦ন্দে¦র কারণে সেই মান একেবারে নিন্মমানের হয়ে পড়েছে। স্কুলে লেখাপড়ার চেয়ে শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বেশি।
অভিভাবক আব্দুল মমিন খান বলেন, জেলার অন্যতম বিদ্যালয় হওয়ায় এখানে আমার ছেলেকে লেখাপড়ার জন্য ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু যেখানে স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্কুলের টাকা আত্মসাত করে। প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে, সেখানে কি ভাবে লেখাপড়া হবে এটা আমার জানা নেই। তাই স্কুলটি সুন্দর ভাবে পরিচালনা করতে হলে দুর্নীতিবাজ শিক্ষককে এখান থেকে অপসারণ করতে হবে।
রায়পুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক সাহারেফ হোসেন বলেন, আমার আগে যিনি এই স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তার বিরুদ্ধে স্কুলের টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ ওঠে। তিনি বিষয়টি ধামা চাপা দেওয়ার জন্য আমার নামে এবং বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নামে মামলা দায়ের করেন। সেই থেকে এই বিদ্যালয়টি নানা সমস্যার মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, আমি বিদ্যালয়টির উন্নয়নের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের নিকট বিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের হিসাব চাইলে তিনি আমাকে হিসাব না দিয়ে উল্টো কোর্টে আমার নামে মিথ্যা মামলা করেছে। শুধু আমার নামেই নয় এই বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি শিক্ষকের নামে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিক্ষা অফিসারের নামে মিথ্যা মামলা করেছেন । যাতে তার এই দুর্নীতির কেউ প্রতিবাদ না করতে পারে।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস,এম মুনিম লিংকন বলেন, রায়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি নানা সমস্যার মধ্যে পরিচালিত হচ্ছিল। আমি বিদ্যালয়টি ঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য সাময়িক ভাবে দায়িত্ব নিলে আমার বিরুদ্ধেও মামলা করেছে। তবে বিদ্যালয়টি যেন ঠিকভাবে পরিচালিত হয় সে বিষয়ে আমি সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।