মানুষকে ভালোবেসে যতগুলো ভাল কাজ করা যায়, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্বেচ্ছায় রক্তদান। দিন দিন স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা বাড়ছে। এই সব রক্তদাতাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করছেন মেহেরপুরের জুয়েল রানা, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশি, বিজনসহ কয়েকজন।
মেহেরপুরের তরুণ-তরুণীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গড়ে তোলা হয়েছে Blood donation group in meherpur নামের একটি গ্রুপ। প্রায় ১ হাজার সদস্য নিয়ে রক্তদান করে আসছে এই গ্রুপটি। ইতিমধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছে এদের কর্মকাণ্ড।
গ্রুপটি পরিচালনা করার জন্য অন্যদের মধ্যে আছে, জাহিদ ইসলাম দোলন, রাকিব ইসলাম, মিলন, লালন, রাজন, তানিম মোহাম্মদ তুহিন, হাসিবুল, বাপ্পি ও মোডারেটর হিসেবে আছে, অনিক ইসলাম, আসিফ ইসলাম, বাপ্পি, স্বাধীন।
নীরব-নিভৃতে আর্তমানবতার সেবায় মুমূর্ষ রোগীর প্রাণ বাঁচাতে নিরলস কাজ করে চলেছে গ্রুপটি শরীরের রক্ত দিয়ে তারা অন্যের জীবন বাঁচাতে জাগরিত প্রাণ। সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন অভিনব এই ব্লাড ব্যাংক। অন্যের রক্ত যোগাড় করে দেওয়ায় যাদের কাজ। রক্ত কোন ব্যাগে ভরে রাখা হয় না, থাকে ডোনারের শরীরে। আর ডোনারের নাম, ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও ফোন নম্বর লেখা থাকে রেজিষ্ট্রারে। প্রায়োজনেই স্থানীয় হাসপাতাল, ক্লিনিক গিয়ে বিনামূল্যে রক্ত দান করেন ডোনাররা।
গ্রুপের এ্যাডমিন জুয়েল রানা বলেন, আমাদের চারি পাশে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। হটাৎ করে যদি কারও রক্তের প্রয়োজন হয় তাহলে সে সময় যদি রক্ত না পাওয়া যায় তাহলে সে মৃত্যুবরণ করতে পারে।বা কোন গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে রক্ত বেশি প্রয়োজন হয়। এসময় রক্ত পাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এসব কথা মাথা রেখে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে রক্তদাতাদের নিয়ে একটি ফেসবুক গ্রুপ খোলার সিদ্ধান্ত নিই। যেখানে রক্তদাতাদের আমরা একটি প্লাটফর্মে নিয়ে আসবো। যাতে করে যেকোন সময় কোন রোগীর জন্য আমরা রক্ত জোগাড় করে দিতে পারি।
গ্রুপে পোস্ট দেওয়ার পর রক্ত না পাওয়া গেলে, তারা ডোনার লিস্ট থেকে ডোনারদের ফোন দিয়ে রক্তদানের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করেন। এইসব রক্তদানে রক্তদাতা ও রক্তগ্রহিতা উভয়েই আমাদের অপরিচিত। রোগীর রক্ত যোগাড়ের ক্ষেত্রে আমাদের কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন নেই।
আমাদের এখানে কেউ ছাত্র, কেউ চাকুরীজীবী, কেউবা বেকার, সবাই নিজের সময়, অর্থ ও শ্রম দিয়ে শুধু মাত্র আত্মতৃপ্তি আর মানবতার জন্য এই কাজ গুলো করে থাকি।
গ্রুপে মূল্য উদ্দেশ্য জানতে চাইলে তিনি জানান, মুলত রক্তের প্রয়োজনে সাধারণ মানুষের সাথে স্বেচ্ছায় রক্তদানকারীদের একটি সরাসরি সেতুবন্ধন করে দেয়াই এর কাজ! রক্তের জরুরি প্রয়োজনে কাউকে যেন দিশেহারা হয়ে এদিক সেদিক ছোঁটাছোটি করতে না হয়। অসহায় গরীব মানুষগুলোকে যেন উচ্চমূল্য দিয়ে রক্ত কিনতে না হয়, সেই ব্যবস্থাই করে দেওয়া।
মেপ্র/এমএফআর