ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ০৫ নং কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নে দরিদ্রদের খাদ্য বান্ধব ভিজিডির ১০ টাকা কেজি চাল আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে।ঐ ইউনিয়নের হতদরিদ্র অসহায় মানুষদের অভিযোগ, ডিলার জাহিদুল ইসলাম মাস্টারের সহযোগিতায় ইউপি চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন যাবত তাদের নামে কার্ড করেছেন। অথচ তাদেরকে চাল না দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই তাদের নামিও কার্ডের চাল উত্তোলন করে আত্নসাত করে যাচ্ছেন।
জেলা-উপজেলায় সরকারের মানবিক সহায়তা প্রাপ্যদের তালিকাভুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন অসহায় ও গরিব এই মানুষগুলো। তাদের নামও দেওয়া হয়েছে, অথচ এই মানুষগুলো তাদের নামে কার্ড আছে, সেই কার্ডে চাল তোলা হচ্ছে এর কিছুই জানেন না।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। নিজের নামে কার্ড আছে কিন্তু তারা জানেন না এমন ১৫ থেকে ১৮ জন সরে জমিনে তথ্য সংগ্রহ কালীন তারা অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান । সেসময় ঘটনার বৃত্তান্ত উল্লেখ করে কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও ডিলারের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
এদের মধ্যে মোঃ বিল্লাল হোসেন, পিতাঃ আবুল হোসেন কার্ড নং-২৯৭ তিনি চাকরিতে চলমান একজন সেনা সদস্য। যদিও তার এই সরকারি সহায়তার প্রয়োজন নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে একজন সেনা সদস্যের নাম ভিজিডি কার্ডে দেওয়াই যেমনটি ওই এলাকায় তার মান ক্ষুন্ন করা হচ্ছে, তেমনি তার অজান্তে ওই কার্ড দিয়ে কে বা কাহারা চাল উত্তোলন করছে তার কোন হদিস না মেলায় ভিজিডির চাল বিতরণে দুর্নীতি প্রকাশ পাচ্ছে। একই ওয়ার্ডে রেখা খাতুন, স্বামী: রাহুল জনগণের দাবি চেয়ারম্যানের অতি কাছের লোক হওয়ায় ঐ মহিলার নামে দুইটি কার্ড হয়েছে যার কার্ড নাম্বার (সুলভ মূল্য কার্ড নম্বর-২৯৫ ও ভিজিডি কার্ড নম্বর-৭৮)।অন্য আরেকটি ওয়ার্ডে খোজ নিয়ে দেখা যায় একই পরিবারের (পৃথক পরিবার) অসয়াই তিনজনের নামে কার্ড ইস্যু হয়েছে অথচ তারা জানেই না। এরকম ঘটনা আরও দুই পরিবারের মাঝে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সেখানেও একই ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে ঐ ইউনিয়নের দু’জন ওয়ার্ড মেম্বরের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন,করোনার এই ক্লান্তি কালে সরকারের দেওয়া ভিজিডি’র ১০ টাকা কেজি চাল, নামের তালিকা অনুযায়ী সঠিক ভাবে বণ্টন হচ্ছেনা। যাদের নাম তালিকায় আছে অথচ তারা কার্ড পাননি আবার অনেকে পেয়েছে তাদেরকে একবার চাল দিয়ে কৌশলে কার্ড নিয়ে নেওয়া হয়েছে। জনগন আমাদের কাছে অভিযোগ করছে অথচ এ বিষয়ে আমাদের কোন হাত না থাকায় আমরা জনগণের কাছে হেও প্রতিপন্ন হচ্ছি।তারা দাবি করেন তাদের ওয়ার্ডে এক শতাধিকের অধিক লোক যেখানে এর আওতায় থাকা উচিৎ সেখানে ২৫/৩০ জনকে আওতাভুক্ত করা হয়েছে। এর মদ্ধ্যেও দুই ওয়ার্ড মিলে ১৭/১৮ জনের একটি তালিকা দেখান যাদের নামে কার্ড ইস্যু আছে অথচ তারা জানেননা যে তাদের নামে কার্ড ইস্যু হয়েছে। তাদের নামের তালিকায় যথাক্রমেঃ কার্ড নং- ৫৭,১৪৪,১৭৭,২০৩,২০৬,২২০,২২২,২২৬,২৭২,২৭৮,২৭৯,২৮০,২৮২,২৮৩,২৯২,২৯৫,২৯৭,ও ৩০০। ইউনিয়ন পরিষদের ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের এই দুই সদস্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের শান্তি দাবি করে সঠিক ভাবে চাল বণ্টনের জোর দাবি জানান।
জেলা-উপজেলায় সরকারের মানবিক সহায়তা প্রাপ্যদের তালিকাভুক্তির আওতায় আছেন কিন্তু তারা কার্ড পাননি । নিয়ম হলো সরকারের ভিজিডি কিংবা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবেন। কিন্তু এখানে তার ব্যাতিক্রম দেখা গেছে বলে এলাকার সচেতন মহলের দাবি।
অভিযোগ ওঠা ডিলার হলেন, উপজেলার কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের কুমড়াবাড়ী গ্রামের মোঃ জাহিদুল ইসলাম মাস্টার । লিখিত অভিযোগে বলা হয়, তাঁরা কোনো দিনই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল উত্তোলন করেননি। এমনকি তাঁরা জানেন না যে তাঁদের নামে কার্ড আছে।
এ বিষয়ে কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বলেন,বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন মেম্বার আমার কাছে অভিযোগ করেছেন এ বিষযয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এছাড়াও তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নে কিছু মেম্বার রাজনৈতিকভাবে বিরোধি থাকায় তারা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয় রানি করার চেষ্টা করছে।