দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর বে-সরকারী শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়। গত জুনের ১০ তারিখের সর্বশেষ মাউশি’র এক প্রজ্ঞাপন মোতাবেক বে-সরকারী স্কুল কলেজের শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেড দেওয়ার লক্ষ্যে অনলাইনের মাধ্যমে স্ব-স্ব উপজেলায় শিক্ষকদের কাগজ পত্র প্রেরণ করার জন্য বলা হয়।
সে লক্ষ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় কর্মরত বে-সরকারী হাইস্কুলের শিক্ষকরা যাদের চাকুরীর বয়স ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে তারা জুলাইয়ের ৮ তারিখের মধ্যে আবেদন করেন। এসব শিক্ষকদের নিকট থেকে অফিস সহকারী ৫০০/১০০০ এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে জেলা শিক্ষা অফিস বরাবর তাদের আবেদন ফরোয়াড করেন।
কিন্তু সমস্যা হলো সদর উপজেলার ৮৬ জন শিক্ষকের আবেদন উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী ভুল করে পূরণ করা আবেদন জেলা ও উপ-পরিচালক (খুলনা অঞ্চল) খুলনা বরাবর প্রেরণ করে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে রিকমান্ড দিলেও খুলনা উপ-পরিচালকের কার্যালয় থেকে এই ৮৬ জন শিক্ষকের আবেদন পত্র বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন কারনে আরও কিছু শিক্ষকের আবেদন রিজেক্ট করে দেওয়া হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষার উচ্চতর গ্রেড পাচ্ছেন না ঝিনাইদহ সদর উপজেলার প্রায় শতাধিক শিক্ষক। এছাড়াও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক বলেন, টাকা ছাড়া কোন কাজই হয়না এই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যেমন, নতুন উপবৃত্তির ফরম জমা, বিজয় ফুল বাবদ বরাদ্ধ টাকা, স্বীকৃতি নবায়নের জন্য বিদ্যালয় পরিদর্শন, নতুন অনুমোদিত বিদ্যালয় পরিদর্শন, নতুন এমপিও চালু হওয়া প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক কর্মচারীদের আবেদনে তো ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়।
এছাড়া প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সহকারী লাইব্রেরীয়ান ও কর্মচারী নিয়োগের হিসাব তো আলাদা। নিয়োগ বোর্ডের টাকা প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা নেওয়া হয় বলেও তারা জানান।
কয়েকজন প্রধান শিক্ষক অভিযোগের সুরে বলেন, বই বিতরণের সময় ভাড়ার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা হওয়ার কথা থাকলেও ৩ বছর ধরে অনেক প্রতিষ্ঠান সেই টাকা পাননি। এমনকি ঘুষের টাকা না দেওয়ায় প্রণোদনার টাকা পাইনি ঝিনাইদহে কিছু এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা।
এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার এম এ আরিফ সরকার বলেন, এসব অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই, আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে লিখিত দিলে খতিয়ে দেখা হবে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শুশান্ত কুমারদেবে’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঝিনাইদহে একটি সংঘবদ্ধচক্র এসব অপকর্মের সাথে দীর্ঘদিন জড়িত। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করব।