ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনা এখন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণহানীই শুধু নয়, বরং বিপর্যস্ত পরিবারের চিরস্থায়ী দুর্ভোগও বটে। নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। কোন ভাবেই সড়কে এই মৃত্যুর মিছিল থামছে না। প্রতিদিনই একের পর এক তাজা প্রাণ হারিয়ে যাচ্ছে।
এভাবে থমকে যাচ্ছে বহু পরিবার। আর যেসব লোক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন অথবা পঙ্গুত্ববরণ করেন তাদের পরিবারের খবর কেউ রাখে না। সড়ক দুর্ঘনার এই অবস্থা এখন মহামারি আকার ধারণ করেছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। একটি ঘটনার রেশ না কাটতেই ঘটছে আরেকটি ঘটনা। এদিকে গত তিনমাসে ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২জন নিহত হয়েছেন।
এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৮ জন, কালীগঞ্জে ৭ জন, মহেশপুরে ৭ জন, কোটচাঁদপুরে ২ জন, শৈলকুপায় ৬ জন ও হরিণাকুণ্ডুতে ২ জন রয়েছে।
নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ সড়ক-মহাসড়কে চলালকৃত অবৈধ যানবাহনের কারণে মারা গেছেন। এছাড়া কিশোর ও তরুণ কলেজ শিক্ষার্থীরাও দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালানোর ফলে প্রাণ হারিয়েছেন।
নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠেনের কর্মী সাকিব মোহাম্মদ আল হাসান জানান, সড়ক মহাসড়ক ক্রমেই অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। প্রতি নিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পাল্লা ভারি হচ্ছে, কিন্তু কোন প্রতিকার নেই।
জেলা সুজনের সভাপতি ও মানবাধিকার কর্মী আমিনুর রহমান টুকু জানান, বৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে সড়কে এই মৃত্যুর মিছির থামানো যাবে না। এ ক্ষেত্রে সমাজের সব শ্রেনীর মানুষকে যুক্ত হতে হবে।
ঝিনাইদহ বিআরটিএর সহকারী পরিচালক আতিয়ার রহমান জানান, আমরা তো সব সময় সড়কে নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছি। ড্রাইভারদের প্রশিক্ষন দিচ্ছি, মানুষকে সচেতন করছি। তারপরও সড়ক দুর্ঘটনা রোধ সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন সড়কে নতুন নতুন গাড়ি চলাচল করছে। ফলে সড়কগুলো বেশি ব্যস্ত হয়ে উঠছে।
ঝিনাইদহ হাইওয়ে পুলিশের ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমরা সড়ক-মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন মুক্ত করতে প্রতি নিয়ত অভিযান চালাচ্ছি। চলাচলকৃত নসিমন, করিমন, আলমসাধু, ভটভটি ও ইজিবাইক আটক করে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। তরপারও তাদের থামানো যাচ্ছে না।
তিনি বলেন পুলিশের একার পক্ষে অবৈধ যানচলাচল বন্ধ করা সম্ভব নয়। সাধারণ মানুষ যদি সচেতন না হয় তবে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।