টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমায় বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ঝিনাইদহ জেলার উলামা মাশায়েখ ও শুরায়ী নেজাম তাবলীগের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারী) দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা মারকায মসজিদ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঝিনাইদহ জেলা উলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি আরিফ বিল্লাহ কাসেমী বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে সারাদেশ থেকে জড়ো হওয়া সাদপন্থী সন্ত্রাসীরা টঙ্গী কামারপাড়া ব্রীজের উত্তর পশ্চিমে কোণের টিনের গেট ভেঙ্গে আমাদের ঘুমন্ত, তাহাজ্জুদ নামাজরত সাথীদের উপর ছুরি, রামদা, হকিস্টিক, বাঁশের লাঠি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৪ জন সাথীকে শহীদ করে। শত শত সাথীকে আহত করে এবং অনেক কে গুম করে। দুইজনকে গলা কেটে হত্যা করে। এমনকি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত আমাদের সাথীদের উপরেও হামলা চালায়।
ইতিপূর্বে ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর এই সাদপন্থী সন্ত্রাসীরা দিনের হামলা চালিয়ে সহস্রাধিক সাথীকে আহত ও পঙ্গু করেছিল। তারা সেদিন বিশ্ব ইজতেমাকে ভন্ডুল করতে চেয়েছিল। এবারও তারা ইসরাইলের মোসাদ এবং ভারতের ‘র’ এর নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ব ইজতেমাকে ভন্ডুল করার জন্য কৌশল পরিবর্তন করে রাতের অন্ধকারে হামলা চালায়। তারা রাতের অন্ধকারে হামলা চালাবে এটা তাদের আগে থেকে পরিকল্পনা করা ছিল। গত ৭ ডিসেম্বর হামলার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় মাল-সামানা বিশেষভাবে উপর নীচের সামিয়ানা, টর্চলাইট, হ্যান্ডমাইক, শুকনা চিড়া-মুড়ি সাথে নিয়ে আসবেন বলে তার ঘোষণা দেয়। আমরা আজ পর্যন্ত কখনো শুনি নাই ইজতেমার ময়দানে টর্চলাইট ও হ্যান্ডমাইকের প্রয়োজন হয়। ২০১৮ সালের এবং ২০২৪ সালের হামলা ও হত্যাকান্ড একইসূত্রে গাঁথা।
শুধু সময়ের পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। প্রয়োজনে তারা এই হামলা এবং এই হত্যাকান্ড বার বার ঘটাবে। লেবাসধারী মুসলমান থাকবে কিন্তু তাদের মধ্যে দ্বীন থাকবে না। এই চক্রন্ত বস্তবায়নের জন্য তারা অর্থের বিনিময়ে আজ মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশকে তারা প্রথম টার্গেট করেছে। কারণ বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় ইজতেমা হয়। বাংলাদেশের মানুষ অধিক পরিমাণে তাবলীগ করে। তাবলীগকে পছন্দ করে। এই দেশের ইজতেমাকে বন্ধ করতে পারলে, ধ্বংস করতে পারলে পুরা বিশ্বে এর প্রভাব পড়বে। যারা মুসলমান হয়ে বিনা কারণে আরেক মুসলমান ভাইকে আঘাত করে, ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে, জবাই করে হত্যা করে তারা কখনই ইসলামের দাওয়াত দিতে পারে না, তারা দাওয়াতের মেহনত করার যোগ্যতা ও অধিকার রাখে না, তারা খুনী সন্ত্রাসী। আবারো বলছি তারা খুনী সন্ত্রাসী, তাদের হিংস্রতা, বর্বরতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দেশে-বিদেশে ইসলাম, মুসলমান এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে নষ্ট করছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুর রউফ, কে.সি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহীনুর ইসলাম, ডাকবাংলা আব্দুর রউফ ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক ওলিয়ার রহমান, ওজোপাডিকো ঝিনাইদহ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল জলিল কে অনতিবিলম্বে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ঝিনাইদহ জেলা হতে ডা. আব্দুর রউফের নেতৃত্বে টঙ্গী ময়দানে হামলায় অংশগ্রহণকারী সাদপন্থী খুনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন তাবলীগের সাথী আলমগীর হোসেন, মোঃ আব্দুল হামিদ আব্দুল, আব্দুল করিম, আব্দুস সালাম ও এলাকার সাবেক কাউন্সিলর মোঃ আক্তারুজ্জামান।