তীব্র তাপদাহে মানুষের জীবণ যখন উষ্ঠাগত কৃষকরা তখন খাঁ খাঁ রৌদ্রোজ্জ্বল মাঠে তাদের সোনালী ধান গোছাতে ব্যস্ত। তখন ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ঠান্ডা পানি ও স্যালাইন হাতে ছুটে চলেছে মাঠে-মাঠে কৃষকের পিছে পিছে। ধানের ক্ষেত, ভুট্রার ক্ষেত, পাটের ক্ষেত যেখানেই যাকে পাচ্ছেন খাওয়াচ্ছেন স্যালাইনের পানি। হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন স্যালাইনের প্যাকেট ।
মানুষের জীবণ বাঁচাতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নিজেই নেমে পড়েছেন তৃষ্ণার্ত মানুষের পাশে। নিজের জীবণের তোয়াক্কা না করে ছুটে চলেছেন ইউনিয়নের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত । কথনও এ মাঠে তো কথনও ও মাঠে ক্ষেতের কৃষককে খাওয়াচ্ছেন ঠান্ডা স্যালইনযুক্ত পানি। এরপরও শেষ নয়, হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন ৫টি খাবার স্যালাইনের প্যাকেট সাথে সুস্থ থাকার সতর্কতামুলক লিফলেট।
এমনই ঘটনা গত ৭ দিন ধরে চোখে পড়ছে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ড উপজেলার ৪নং দৌলতপুর ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ এ কাজটি করছেন এই বৈরী আবহওয়ায় মানুষ যেন একটু স্বস্তি পায়, সুস্থ থাকতে পারে সেজন্য। এলাকার মানুষও তার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, এর আগে এমন গরমও আমরা যেমন দেখিনি তেমনি চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগও এর আগে আমরা পাইনি, সবই এবারই প্রথম। এমন চেয়ারম্যান পেয়ে আমরা খুশি। সব সময় সে আমাদের বিপদে আপদে পাশে থাকে। এই রোদে, গরমে সে মাঠে এসে আমাদের ঠান্ডা পানি আর স্যালাইন খাওয়াচ্ছে, আবার বাড়ির জন্য দিয়েও দিচ্ছে। এই গরমে কাজ করতে করতে যখন গলা, বুক তৃষ্ণায় শুকিয়ে যাচ্ছে তখন চেয়ারম্যানের দেওয়া স্যালাইন পানি খেয়ে একটু স্বস্তি ফিরে পাচ্ছি, নতুন উদ্যোমে আবারও কাজে মনোনিবেশ করতে পারছি।
চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন,আমাদের দেশের সোনার মানুষ এই কৃষক। কৃষি প্রধান দেশে কৃষকই আমাদের সম্পদ। তারা এই গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। তপ্ত রোদে যখন মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেনা তখন আমাদের কৃষক ভাইয়েরা মাঠে কাজ করছে। এই মানুষগুলো এখন খুব বিপদে। এই বিপদে নিজেকে ঘরে রাখতে পারিনি। এমন কাজের সুযোগ পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। তাদের হাসির মাঝে আমি আমার দেশের হাসি খুজে পায়, তাই এই মানুষ গুলোকে গরমে একটু স্বস্তি দিতেই আমি এই উদ্যোগ নিয়েছি। দীর্ঘ করোনাকালীন সময়েও মানুষের পাশে থেকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মানুষ আমার ভালোবাসার প্রতিদান দিয়েছে।
গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রর্থী হিসাবে আবুল কালাম আজাদ প্রথম বারের মতো ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হিসাবে বিজয়ী হন ।