ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে সেবা নিতে এসে সাধারন মানুষ পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছে। অধিকাংশ সময় অফিসে থাকে না অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। হয়রানির শিকার হলেও দেখার কেউ নেই। বিষয়টি ভুক্তভোগীরা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে নতুন ভোটার হতে যান আসলাম হোসেন নামের এক যুবক। ওইদিন তার ছবি তোলার দিন ছিল। সকাল ১১টা থেকে অফিসে বসে থাকেন তিনি। তাকে জানানো হয় বেলা ৩ টার পর তার ছবি নেওয়া হবে। স্বপনা খাতুন নামের আরেক নারীর জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে গেছে। তাই পূর্ণরায় আবেদন করতে যান নির্বাচন অফিসে।
অফিস থেকে তাকে জানানো হয় পুরাতন ডিসি কোর্ট সংলগ্ন জেলা পরিষদ মার্কেটের রংধনু ফটোষ্ট্যাট থেকে আবেদনের ফর্ম সংগ্রহ করতে। তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত টাকা জমাদানের ফর্মের মাধ্যমে কোড অনুযায়ী ফি ৩০০ টাকা, ১৫% মুশক ও অনলাইন ফিস ২৩ টাকা জমা দিয়ে নির্বাচন অফিসে আবেদন পত্র জমা দিতে গেলে জানানো হয় সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছেন এটি নেওয়া হবে না। টাকা ডাচ বাংলা ব্যাংকে জমা দিতে হবে। ওই মহিলা চরম ভোগান্তির শিকার হন।
আরেক মহিলা তার ভোটার কার্ড সংশোধনের জন্য আসেন নির্বাচন অফিসে। তাকেও এমনিভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এমনব অভিযোগের শেষ নেই নির্বাচন অফিসের বিরুদ্ধে। নিদির্ষ্ট পরিমান ঘুষের টাকা দিলে কোন ঝামেলা নেই। অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে ঝিনাইদহ নির্বাচন অফিসে কর্মরত রয়েছেন সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর রবিউল ইসলাম ওরফে রাজন। যার সুবাদে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে দিয়ে সাধারন সেবা গ্রহীতিদের হয়রানি করে থাকেন। হয়রানির ফাঁকে ঘুষ বানিজ্যের কাজও তিনি করেন।
এছাড়া রবিউল ইসলাম স্মার্টকার্ড বিতরণের আগে স্বেচ্ছাসেবক ও সুপারভাইজার নিয়োগের সময় নিজের পছন্দ মত প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া সহ ভোটার স্থান পরিবর্তনে বিভিন্ন দুর্নীতি করে আসছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে মানুষের ভোগান্তি ও অফিস ফাঁকি দিয়ে চলেন অফিসের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
নির্বাচন অফিসার মোঃ মশিয়ার রহমানকে অফিসে পাওয়া যায় না। তবে সকল হয়রানি ও ঘুষ বানিজ্যের কথা অস্বীকার করেছেন সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর রবিউল ইসলাম। তিনি জানান, যা কিছু করি অফিসের নির্দেশে।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও প্রধান তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান কাছে জানাতে চাওয়া হলে তিনি ঘুষ বানিজ্যের কথা অস্বীকার করে জানান, অফিস সঠিক নিয়মে চলছে। আমি অফিস ফাঁকি দিয় না। সপ্তাহে ২দিন তদন্তে আমি বাইরে যায়। যার কারনে সেবা গ্রহীতারা আমাকে অফিসে পায় না। তবে সপ্তহে দুইদিন কোথায় সেবা দিতে গিয়েছিলেন তিনি তা সঠিক করে বলতে পারেননি।