বিক্রি করা জমি নিয়ে ৩৭ বছর ধরে মামলা চালিয়েছেন। স্বত্ব না থাকায় নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত হেরেও গেছেন। তারপরও পিছু ছাড়ছেন না বিএনপি নেত্রী ও ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ফারহানা রেজা আঞ্জু। আদালতের রায় উপেক্ষা করে পরের জমিতে তুলছেন স্থাপনা। এক্ষেত্রে তিনি পুলিশ ও আদালতের কোন বিধি নিষেধ মানছেন না। জমি দখলের এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ শহরের ১৫৭ নং কাঞ্চননগর মৌজায় এইচ, এস, এস সড়কের দক্ষিন পাশে ৯৮/১ খতিয়ানের সাবেক ১০৪ এবং হাল ১৭৬০ ও ১৭৬১ নং দাগে। ঝিনাইদহ সদর থানায় লিখিত
অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের গীতাঞ্জলী সড়কে সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মশার স্ত্রী তৌহিদা খাতুন ও তার দেবরের স্ত্রী ফরিদা খাতুন ১৫৭ নং কাঞ্চননগর মৌজার অধীনে ১০৪ নং দাগে ১২ শতক জমি জনৈক ইউসুফের কাছ থেকে ক্রয় করেন। ১৯৭৮ সালে ইউসুফ ওই জমি কেনার জন্য মালিক দলিল উদ্দিনের সাথে বায়না করেন। দলিল উদ্দিন জমি রেজিষ্ট্রি করে না দেওয়ায় ১৯৮১ সালে ইউসুফ আদালতের মাধ্যমে উক্ত জমির সত্ত্ববান হন। এর আগে দলিলউদ্দিন একই দাগের ৬ শতক জমি ১৯৭৪ সালে জামিলা আহম্মেদ কাছে বিক্রি করে। সাবেক পৌর কাউন্সিলর ফারহানা রেজা আঞ্জুর পিতা দলিলউদ্দিন গং পরবর্তীতে জমির মালিকানা নিয়ে মামলা করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর আদালতে মামলা চলতে থাকে। সর্বশেষ ২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বিবাদীর পক্ষে চুড়ান্ত রায় প্রদান করে। রায় হওয়ার পর ঝিনাইদহ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক বিবাদী তৌহিদা খাতুন ও ফরিদা খাতুনের পক্ষে উচ্ছেদের রায় দেন। ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই আদালতের নির্দেশ পেয়ে ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশ এসে দখলকৃত স্থাপনা উচ্ছেদ করে জমির প্রকৃত মালিককে দখল সত্ব বুঝিয়ে দিয়ে যান। এদিকে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আদালতের রায় উপেক্ষা করে ওই জমিতে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন ওই বিএনপি নেত্রী।
তৌহিদা খাতুন সোমবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে লিখিত এক অভিযোগে জানান, বিএনপি করার কারণে সাবেক কমিশনার আঞ্জু শক্তি প্রয়োগ করে জমি দখল করে ঘর নির্মান অব্যাহত রেখেছেন। তিনি কোন আইন কানুনের তোয়াক্কা করছেন না। আমি এবং আমার পরিবার আনজুর পেশি শক্তির কাছে অসহায়।
জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর ফারহানা রেজা আনজু বলেন, এটা তার পৈতৃক সম্পত্তি। আদালতকে প্রভাবিত করে বিবাদীগন তঞ্চকতার মাধ্যমে তাদের পক্ষে রায় নিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পায়নি।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মোঃ শাহিন উদ্দীন জানান, জমি দখলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ বিবাদীর পক্ষে সর্বোচ্চ আদালতের রায় রয়েছে এবং আদালতের নির্দেশে মামলার বাদীকে উচ্ছেদ করে বিবাদীকে জায়গা বুঝে দিয়েছে। ফলে পুলিশ উভয়পক্ষকে আদালতের রায় মেনে চলতে বলে এসেছেন। এদিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মানকাজ বন্ধ করে দিয়ে এলেও পরক্ষনে তা আবার শুরু করেছেন বলে তৌহিদা খাতুনের ছেলে এ্যাড মাজহার সবুজ অভিযোগ করেন।