ঝিনাইদহ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলীর যোগসাজশে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের বিরুদ্ধে।
ঝিনাইদহ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পুরাতন ভবন সংস্কার, পেইন্টিং, টাইলস, সেনেটারি, বাথরুম ফিটিংস, সুইজ স্থাপন, ইলেকট্রিক ওয়ারিং, বাউন্ডারি ওয়ালের রংয়ের কাজ, ফ্লোর টাইলস, বেসিন, মুল ভবনের দরজা, জানালা সংস্কারসহ বিভিন্ন কাজের জন্য ১১ লাখ ৩৯ হাজার টাকার দরপত্র আহবান করা হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পায় মধুবন কনস্ট্রাকশন।
অভিযোগ রয়েছে, দরপত্রের কার্যাদেশ অনুযায়ী এ গ্রেডের টাইলস, সেম-টু সিমেন্ট ও ১.২ এফ.এম বালু ব্যবহার করার কথা থাকলেও কার্যাদেশ উপেক্ষা করে সংস্কার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। বালু ও সিমেন্টের সংমিশ্রণ সঠিক মাত্রায় না করে ফ্লোরে সিমেন্টের পরিমাণ কম দিয়ে বালুর পরিমাণ বেশি দিয়ে টাইলস বসানো হয়েছে। এছাড়া শিরিষ কাগজ দিয়ে পুরনো ভবনের দেয়াল থেকে রং না ছাড়িয়েই ময়লা ও মরিচার উপর রং করে চকচকে ঝকঝকে করে তোলা হয়েছে। এতে করে সামান্য হাতের স্পর্শে নতুন দেয়ালের রং খসে খসে পড়ছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে যেয়ে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের এক স্টাফ কে দেখা গেলেও কাজের সাইডে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তদারকির দায়িত্বে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। যে কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের এসব সামগ্রী ব্যবহার করে শ্রমিক দিয়ে ইচ্ছেমতো সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সাবেক এক কর্মকর্তা জানান, জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সহকারী পরিচালক প্রবীর কুমার মন্ডল স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলীকে কৌশলে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে বসার জন্য চেয়ার, টেবিল সহ একটি রুম সাজিয়ে দিতে বলেছে এই শর্তে যে তিনি সংস্কার কাজের জন্য বরাদ্দ আসা কাজের ব্যাপারে কোন তদারকি করবেননা। অথচ তার নাকি জেলা অফিস থেকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে বসার কোন নিয়মই নেই।
এ সকল অভিযোগের ব্যাপারে ঠিকাদার উজ্জ্বল বলেন, সিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। তবে সিডিউলে কি কি কাজের উল্লেখ আছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ার এর সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এদিকে কাজের তদারকি কর্মকর্তা ঝিনাইদহ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী এস.এম শামীম হোসাইন সংস্কার কাজে অনিয়মের বিষয়টি স্বীকার করতে নারাজ। তিনি জানান, জিওবি প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্য বিভাগের হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। সংস্কার কাজে বিভিন্ন অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, তিনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সাফাই গাইতে শুরু করেন। তার দাবি, কোন অনিয়ম ছাড়াই ইস্টিমেট অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। অপারেশন থিয়েটারে টাইলস লাগানোর প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে তিনি তার স্বপক্ষে যুক্তি দেন।