স্ত্রী শর্মিলা খাতুনের এখন আর নতুন কাপড়ের আশায় নয়, প্রতীক্ষা করছেন স্বামীর লাশের। ঈদের নতুন জামা কাপড়ের জন্য আর অপেক্ষায় থাকবেনা আরাফাত আলী ও সাব্বির হোসেন। এখন শুধু পরিবার জুড়েই শোকে মাতম।
আর মাত্র কয়েকদিন কাজ করেই একবারে ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার কথা টাইলস মিস্ত্রি আলমগীর হোসেনের (৩৮)। তার আগেই বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে চিরতরের জন্য ছুটি নিলেন তিনি।
ঢাকার আগারগাঁও এলাকার নিউরো সাইন্স হাসপাতাল বহুতল ভবনের লিফটের নবম তলার সিলিং এর কাজ করার সময় অসাবধানতা বসত বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যান তিনি।
আলমগীরের চাচা রবিউল ইসলাম রবি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, করিম গ্রুপের কাছ থেকে কাজটি সাব কন্ট্রাক্ট নেন আমার বড় ভাই শফিকুল ইসলাম। আমার আরেক ভাই মাহাতব উদ্দীনের ছেলে আলমগীর হোসেনসহ বেশ কয়েকজন গতকাল সোমবার বিকালে ওই ভবনের টাইলসের কাজ করছিলেন। হঠাৎ অসাবধানতা বসত বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যায় সে। স্থানীয় থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। এছাড়া তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে আজ মঙ্গলবার বিকালে বাড়ির উদ্দ্যেশ্যে রওনা হয়েছে।
এদিকে আলমগীর হোসেনের বাড়ি গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে পরিবারের সকলেই শোকার্ত। স্ত্রী শর্মিলা খাতুন তার বড় ছেলে আরাফাত আলী (১৪) সাব্বির হোসেন(৪) নিয়ে স্বামীর লাশের জন্য অপেক্ষা করছেন। শর্মিলা খাতুন বলেন, মরার কিছুক্ষণ আগে তার সাথে আমার মোবাইল ফোনে কথা হয়। আমাকে বলেছিলো একবারে ঈদের ছুটি নিয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরবো। তোমার জন্য শাড়ি ও ছেলে মেয়েদের জন্য ঈদের সব পোশাক কিনে আনবো। আমি এখন আর শাড়ি চাইনা। বড় ছেলে আরাফাত হোসেন বলে, আগের দিন আব্বুর সাথে কথা হয়েছে। আমার কি কি লাগবে জানতে চেয়েছিল। আমার কিছু জামা কাপড় আনার কথা বলেছিলাম আব্বুকে। শুধু তার পরিবারই নয় তার পাড়ার সকলেই শোকার্ত আলমগীর হোসেনের মৃত্যুর সংবাদে।
উল্লেখ্য, গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামের মধ্যপাড়া এলাকার মাহাতাব উদ্দীনের ছেলে আলমগীর হোসেন ঢাকার নিউরোসাইন্স হাসপাতালের নির্মাণাধীণ বহুতল ভবনের টাইলস মিস্ত্রির কাজ করছিলেন। অসাবধানতাবসত বিদ্যুৎপৃস্ট হয়ে মারা যান তিনি।
পারিবারিকভাবে নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিকভাবে জানা গেছে।