জ্বরের ওষুধ হোক কিংবা ব্যথার বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেটের মাঝে আড়াআড়ি একটি দাগ থাকে। কখনো মনে হয়েছে এর কোনো কারণ থাকতে পারে? কখনো ওষুধের পাতায় দুটি ওষুধের মধ্যে বেশ অনেকটা ফাঁক থাকে, আবার কোনো ওষুধে মাঝ বরাবর দাগ সব কিছুরই কারণ আছে। নয়াদিল্লির একটি হাসপাতালের চিকিৎসক সোনিয়া রানাউত বলছেন, এই দাগটিকে বলা হয় স্কোরিং লাইন। ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা এটি রাখে সহজে ওষুধ ভেঙে আধখানা করে নেওয়ার জন্য।
অনেক সময়েই চিকিৎসকরা রোগীর শরীর বুঝে কোনো কোনো ওষুধের মাত্রা মেপে দেন। কিন্তু দেখা যায়, চিকিৎসক যে মাত্রায় তা খেতে বলছেন বাজারে তা অমিল। তার চেয়ে বেশি মাত্রার ওষুধ পাওয়া যায়। যদি কাউকে ৫০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট খেতে বলা হয়, আর ওষুধের মাত্রা থাকে ১০০০ মিলিগ্রাম, সে ক্ষেত্রে নিখুঁতভাবে তা অর্ধেক করা জরুরি। অসমান ভাগ হলে ওষুধের মাত্রা শরীরে কম নয়তো বেশি যাবে। কাজটি নির্ভুল ভাবে করার জন্য এই লাইনটি থাকে।
কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেছেন, অনেক সময়ে লিভার বা কিডনির সমস্যা রয়েছে এমন রোগীর ক্ষেত্রে বেশ কিছু ওষুধের মাত্রা কমিয়ে দেওয়ার দরকার পড়ে। তখন আধখানা ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। মূলত সহজে ভাগ করার জন্যই ট্যাবলেটে এ ধরনের দাগ দেওয়া হয়।
তবে অরিন্দমের কথায়, ক্রমশই এই ধরনের দাগের যৌক্তিকতা কমছে। কারণ এই ভাগাভাগির ঝামেলা এড়াতে বিভিন্ন ওষুধ নানা মাত্রায় নিয়ে আসছে ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো। যেমন থাইরয়েডের ওষুধ আকারে বেশ ছোট। সেগুলো ভাঙতে যাওয়া সহজ নয়। ফলে বিভিন্ন মাত্রায় তা বানানো হচ্ছে।
ওষুধের পাতায় প্রতিটি ওষুধের মধ্যে নির্দিষ্ট ফাঁক থাকে। এর কারণও আছে। কেউ পুরো পাতা না কিনে নির্দিষ্টসংখ্যক ট্যাবলেট চাইলে তা কেটে দেওয়ার সুবিধার জন্যই এ জায়গাটি থাকে। অনেক সময়ে একটি বড় পাতায় একটি ওষুধ রেখে বাকিগুলো ফাঁকা রাখা হয়। এরও কারণও আছে। এক রাজ্য থেকে অন্যত্র পাঠানোর সময় ওষুধ যাতে ভালো থাকে সে জন্য এমন ব্যবস্থা।
সূত্র: যুগান্তর