বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ‘নিপীড়নমূলক’ আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। একইসঙ্গে কভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় সরকারের যখন বন্দীর সংখ্যা কামিয়ে আনা উচিত, তখন তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষের মন্তব্যের দিকে নজর রাখছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে।
বুধবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টার দিকে এইচআরডব্লিউ’র নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে এশিয়ান অঞ্চলের ডিরেক্টর ব্র্যাড অ্যাডামস এসব মন্তব্য করেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে এইচআরডব্লিউ বিবৃতিতে বলেছে, বিভিন্ন ধরনের কর্মী, সাংবাদিক এবং সরকারের অন্য সমালোচকদের হয়রানির পাশাপাশি দীর্ঘদিন আটকে রাখতে আইনটি ব্যবহার করছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘কোনো ব্যক্তিকে নিজেদের সমালোচনাকারী মনে হলেই বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ নির্বিচারে গ্রেফতার করছে। কভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় সরকারের যখন বন্দীর সংখ্যা কামিয়ে আনা উচিত, তখন তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষের মন্তব্যের দিকে নজর রাখছেন।’
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ২৮ জুন কাজলকে আবার জামিন দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয় দুদিনের রিমান্ডে।’
বাংলাদেশের রিমান্ডের ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংস্থাটি বলছে, ‘রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাংলাদেশর হাইকোর্ট থেকে জারি করা নির্দেশনায় বলা আছে এমন একটি কক্ষে করতে হবে, যেটি কাঁচে ঘেরা। এ সময় অভিযুক্তের আইনজীবী এবং স্বজনদের পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেয়ার কথাও বলা আছে। কিন্তু এই নির্দেশনা অনুসরণ করার ঘটনা বিরল। কখনো হয়তো হয়নি।’
কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির শিশির, মানবাধিকার কর্মী মুশতাক আহমেদ ও দিদারুল ভুঁইয়া এবং ব্যবসায়ী মিনহাজ মান্নান ইমনের গ্রেফতারের ঘটনা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘‘সম্প্রতি ভার্চুয়াল আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। তারা সবাই করোনা নিয়ে ‘ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগে এক মাসের বেশি সময় আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হন।’’
এইচআরডব্লিউ’র দাবি, ‘বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রযুক্তি মাধ্যমের জন্য করা হলেও এর মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ বক্তব্যকেও এখন অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।’
এই মহামারীর সময়ে ‘মারাত্মক অপরাধ’ না করা ব্যক্তিদের জেল থেকে মুক্তি দেয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। বলা হয়, ‘কভিড-১৯ নিয়ে সমালোচনা করা ব্যক্তিদের না খুঁজে কাজলের মতো যেসব ব্যক্তি অন্যের বিপদের কারণ হননি, তাদের বাংলাদেশ সরকারের মুক্তি দেয়া উচিত।’
সূত্র- বিডি প্রতিদিন