৬ জুলাই না ফেরার দেশে চলে গেছেন কিংবদন্তি গায়ক এন্ড্রু কিশোর। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মাত্র কয়েকটি সিনেমায় গান গেয়েই প্লে-ব্যাক সিঙ্গার হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান তিনি। একটা সময় ছিল প্রায় প্রত্যেক প্রযোজক-পরিচালক এ শিল্পীর একটি গান হলেও তাদের সিনেমায় রাখতেন।
কারণ তার গানের আলাদা শ্রোতা-দর্শক ছিল। যে গানই তিনি গাইতেন, সে গানই হয়ে উঠত জনপ্রিয়। ঢাকাই সিনেমার এমন কোনো নায়ক নেই যিনি তার গানে ঠোঁট মেলাননি।
চিত্রনায়ক আলমগীরের ঠোঁটেই এন্ড্রু কিশোরের গান দর্শক পর্দায় প্রথম উপভোগ করেন। এজে মিন্টু পরিচালিত দেওয়ান নজরুলের লেখা ও আলম খানের সুর করা ‘প্রতিজ্ঞা’ সিনেমায় ‘এক চোর যায় চলে এ মন চুরি করে পিছে লেগেছে দারোগা’ গানটি দিয়েই আলোচনায় চলে আসেন এ শিল্পী। অবশ্য পরবর্তী সময়ে একই নায়কের ঠোঁটে প্রায় সমসাময়িককালে তার গাওয়া আরও দুটি গান কালজয়ী গানে রূপান্তরিত হয়।
এগুলো হচ্ছে- ‘কারে বলে ভালোবাসা কারে বলে প্রেম, মিলনে বিরহে তারে জানলেম’ ও ‘ভালোবেসে গেলাম শুধু ভালোবাসা পেলাম না, আশায় আশায় দিন যে গেল আশা পূরণ হল না’। ‘অশান্তি’ সিনেমার ‘কী দিয়া মন কাড়িলা ও বন্ধুরে’ ও ‘দোলনা’ সিনেমার ‘তুমি আমার কত চেনা’- গান দুটিও আলমগীরের ঠোঁটে জনপ্রিয়তা পায়।
প্রয়াত বরেণ্য অভিনেতা আনোয়ার হোসেন অভিনীত মহিউদ্দিন পরিচালিত ১৯৮২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বড় ভালোলোক ছিল’ সিনেমায় আনোয়ার হোসেনেরই ঠোঁটে সৈয়দ শামসুল হকের লেখা ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস দম ফুরাইলে ঠুস’ গানটির জন্য প্রথমবার শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন এন্ড্রু কিশোর। একই সিনেমায় একই অভিনেতার ঠোঁটে ‘তোরা দেখ তোরা দেখ দেখরে চাহিয়া’ গানটিও বেশ জনপ্রিয় একটি গান।
নায়করাজ রাজ্জাকের ঠোঁটে ‘অভিযান’ সিনেমায় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা ও আনোয়ার পারভেজের সুর-সঙ্গীতে এন্ড্রু কিশোর ও সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া ‘বাবারে বাবা কারে করলাম বিয়া’ গানটিও বেশ শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। এ ছাড়া রাজ্জাকের ঠোঁটে এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া আরও অসংখ্য জনপ্রিয় গান রয়েছে। নায়করাজের বড় ছেলে বাপ্পারাজের ঠোঁটে ‘আমার ভাগ্য বড় আজব জাদুকর’ ও ‘প্রেমের সমাধি ভেঙে মনের শিকল ছিঁড়ে পাখি যায় উড়ে যায়’- গান দুটিও বেশ জনপ্রিয় গান।
এ ছাড়া আরও বহু গান আছে, যা বাপ্পারাজের ঠোঁটে দর্শক উপভোগ করেছেন। নায়করাজের ছোট ছেলে সম্রাট অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘আমি বাঁচতে চাই’-এ ‘অন্তরে মোর আগুন জ্বলেছে’ গানটি গেয়ে সম্রাটকে আশীর্বাদ করেছিলেন এন্ড্রু কিশোর।
চিত্রনায়ক ফারুক অভিনীত জনপ্রিয় সিনেমা হচ্ছে আবদুস সামাদ খোকন পরিচালিত ‘ঝিনুকমালা’। এ সিনেমার কালজয়ী গান ‘তুমি আমার মনের মাঝি, আমার পরান পাখি, আমার বাড়ি যাইও দিমু ভালোবাসা’। এ গানটিতে এন্ড্রু কিশোরের সহশিল্পী ছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। গানটি লিখেছেন মো. আলমগীর কবির এবং সুর-সঙ্গীত করেন আনোয়ার জাহান নান্টু।
১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এজে মিন্টু পরিচালিত সোহেল রানা অভিনীত ‘চ্যালেঞ্জ’ সিনেমায় ‘ও শবনম তোমারই মতোন একটি বউ মোর আছে প্রয়োজন’ গানটি সোহেল রানার ঠোঁটে প্রথম জনপ্রিয় গান। সোহেল রানা অভিনীত ‘নাগ পূর্ণিমা’ সিনেমায় এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া ‘তুমি যেখানে আমি সেখানে’ গানটিও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এরপরও এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া সোহেল রানার ঠোঁটে আরও বেশকিছু গান জনপ্রিয়তা পায়।
চিত্রনায়ক ওয়াসীমের ঠোঁটে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ‘নান্টু ঘটক’ সিনেমায় পরিচালকের লেখা ও সুর করা ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে উইড়া উইড়া, ঢাকা শহর দেখমু আজ দুইজনে ঘুইরা ঘুইরা’ ছিল ওই সময়ের মানুষের ঠোঁটে ঠোঁটে। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে জহিরুল হক পরিচালিত ‘প্রাণ সজনী’ সিনেমায় মনিরুজ্জামান মনিরের লেখা ও আলম খানের সুর সঙ্গীতে ‘কী জাদু করিলা পিরিতি শিখাইলা, থাকিতে পারি না ঘরেতে’ শ্রোতাদের মাঝে গানটি ভীষণ সাড়া ফেলে। একই সিনেমার ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, রইব না আর বেশিদিন তোদের মাঝারে’, ‘কত রঙ্গ জানো রে মানুষ কত রঙ্গ জানো’, ‘চোখ বুঝিলে দুনিয়া আন্ধার, হায়রে কীসের বাড়ি কীসের ঘর কীসের সংসার’- গানগুলোও দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। আরও বেশকিছু গান গেয়েছেন এন্ড্রু কিশোর, যা ওয়াসীমের ঠোঁটে জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে এ নায়কের ‘লাল মেম সাহেব’ এন্ড্রুর গাওয়া ‘ওগো বিদেশিনী তোমার চেরি ফুল দাও আমার শিউলি নাও’ গানটি বেশ জনপ্রিয়।
প্রয়াত নায়ক জসীমের ঠোঁটে এন্ড্রু কিশোরের সবচেয়ে জনপ্রিয় গান হচ্ছে- জহিরুল হকের ‘সারেন্ডার’ সিনেমার ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়, কেউ পায় কেউ বা হারায়’ গানটি। প্রয়াত নায়ক বুলবুল আহমেদের ঠোঁটেও কিছু জনপ্রিয় গান রয়েছে এন্ড্রু কিশোরের। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘শিমুল পারুল’ সিনেমার ‘ভাপা পিঠা রে তোরে খাইতে গিয়া’ গানটি।
একসময় নায়ক হিসেবে বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন বরেণ্য নাট্যাভিনেতা ও বিজ্ঞাপন নির্মাতা আফজাল হোসেন। প্রয়াত আব্দুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ‘দুই জীবন’ সিনেমায় আফজাল হোসেনের ঠোঁটে ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’ ও ‘তুমি আজ কথা দিয়েছ নিয়েছ ও দুটি মন ঘর বাঁধবে’- গান দুটিও এন্ড্রু কিশোরের কালজয়ী গানের মধ্যে অন্যতম।
প্রয়াত নায়ক জাফর ইকবালের ঠোঁটে দারাশিকো পরিচালিত ‘ভাইবন্ধু’ সিনেমায় এন্ড্রুর গাওয়া ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’ গানটি রীতিমতো একটি ইতিহাস। এটি লিখেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার এবং সুর করেছেন আলাউদ্দিন আলী। প্রয়াত বেলাল আহমেদ পরিচালিত ‘নয়নের আলো’ সিনেমায় আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের লেখা ও সুর করা এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’ ও ‘আমার বুকের মধ্যিখানে’- এ তিনটি গান সিনেমা মুক্তির সময় এত বেশি সাড়া ফেলেছিল, সেই সময়ের পর এন্ড্রু কিশোরকে প্লে-ব্যাক নিয়ে আর কোনো দুশ্চিন্তা করতে হয়নি। কারণ সিনেমার গানে ততদিনে তিনি হয়ে ওঠেন অপরিহার্য একজন সঙ্গীতশিল্পী। এছাড়া ‘আশীর্বাদ’ সিনেমায় সৈয়দ শামসুল হকের লেখা আলম খানের সুর-সঙ্গীতে ‘চাঁদের সাথে আমি দেব না তোমার তুলনা’, মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘অবুঝ হৃদয়’ সিনেমায় আহমেদ ইমিতয়াজ বুলবুলের লেখা ও সুর করা ‘তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন’- গানগুলোও শ্রোতা-দর্শকের মনে এখনও দাগ কাটে।
চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের ঠোঁটেও রয়েছে এন্ড্রু কিশোরের অনেক জনপ্রিয় গান। এন্ড্রু কিশোরের জীবনের গল্প শেষ হয়েছে। কিন্তু তিনি ইলিয়াস কাঞ্চন অভিনীত প্রয়াত শিবলী সাদিক পরিচালিত মনিরুজ্জামান মনিরের লেখা ও আলম খানের সুর করা ‘ভেজা চোখ’ সিনেমায় ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’ গানের মধ্যে বেঁচে থাকবেন। একই সিনেমার ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’ও অন্যতম জনপ্রিয় একটি গান। মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘আঁখি মিলন’ সিনেমায় এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া ইলিয়াস কাঞ্চনের ঠোঁটে ‘আমার গরুর গাড়িতে বউ সাজিয়ে ধুত্তুর ধুত্তুর ধু সানাই বাজিয়ে, যাব তোমায় শ্বশুরবাড়ি নিয়ে’- গানটি এখনও অনেক জনপ্রিয়। স্টেজ শোগুলোয় শিল্পীদের কণ্ঠে এ গানটি বেশ প্রাধান্য পেয়ে থাকে, বিশেষ করে নাচের অনুষ্ঠানে। এ ছাড়া ইলিয়াস কাঞ্চনের ঠোঁটে ‘আজ রাত সারা রাত জেগে থাকব’, ‘বেলী ফুলের মালা পরে’, ‘আজ বড় সুখে দুটি চোখে জল এসে যায়’, ‘প্রেম কখনও মধুর কখনও সে বেদনা বিধুর’সহ আরও বেশকিছু জনপ্রিয় গান রয়েছে, যা এন্ড্রু কিশোরেরই গাওয়া।
চিত্রনায়ক রুবেলের প্রথম সিনেমা ১৯৮৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লড়াকু’তে এ নায়কের ঠোঁটে অভিনীত ‘বুকে আছে মন, মনে আছে আশা, আশা থেকে হয় বুঝি ভালোবাসা’ও আরেকটি জনপ্রিয় গান। পরবর্তী সময়ে রুবেলের প্রায় প্রতিটি সিনেমায় গান গেয়েছেন এন্ড্রু কিশোর।
চিত্রনায়ক মান্নার ঠোঁটে ‘শেষ খেলা’ সিনেমায় এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া ‘সুন্দর সন্ধ্যায় এ গান দিলাম উপহার’ও একটি অনবদ্য গান। চিত্রনায়ক নাইম অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘চাঁদনী’তে এন্ড্রু কিশোরের কোনো গান ছিল না। তবে পরবর্তী সময়ে শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘অনুতপ্ত’ ছবিতে এন্ড্রুর গাওয়া আরডি বর্মণের গান ‘তুমি এসেছিল পরশু’ নাইমের ঠোঁটে জনপ্রিয়তা পায়।
নায়ক ওমর সানীর ঠোঁটেও বেশকিছু জনপ্রিয় গান রয়েছে। তার অভিনীত প্রথম সুপারহিট সিনেমা ‘চাঁদের আলো’তে ‘তুমি আমার চাঁদ আমি চাঁদেরই আলো’ গানটি সিনেমার মুক্তির সময়কালে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। পরবর্তী সময়ে ওমর সানীর ঠোঁটে এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া ‘আমার একদিকে পৃথিবী একদিকে ভালোবাসা’, ‘আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটারে’, ‘এলো বসন্ত আমার গানে’, ‘আমার মন ময়ূরী আয় রে তোমার ময়ূর ডাকে রে’, ‘হারানো প্রেমের স্মৃতি মনে করে দেখ’ ও ‘জাগো জাগো প্রিয়তমা’, সুখেরও নীড়ে আমি নীড়হারা পাখিটা’ প্রভৃতি গানও বেশ শ্রোতাপ্রিয়তা পায়।
চিত্রনায়ক আমিন খান অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘অবুঝ দুটি মন’-এ ‘স্বর্গ হতে এই জগতে তুমি এসেছ আমি এসেছি… তুমি আমার জীবন’ এন্ড্রুর গাওয়া এ গানটিও জনপ্রিয় একটি গান।
ঢাকাই সিনেমার অমর নায়ক সালমান শাহের ঠোঁটেও রয়েছে এন্ড্রু কিশোরের অসংখ্য জনপ্রিয় গান। যদিও সালমান শাহ অভিনীত প্রথম সিনেমা সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’-এ এন্ড্রু কিশোরের কোনো গান ছিল না। এমনকি সালমান শাহ অভিনীত দ্বিতীয় সিনেমা ‘তুমি আমার’ সিনেমায়ও এ শিল্পীর কোনো গান ছিল না। এ নায়কের অভিনীত তৃতীয় সিনেমা শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘অন্তরে অন্তরে’-তে ‘এখানে দু’জনে নিরজেন’, ‘ভালোবাসিয়া গেলাম ফাঁসিয়া করতে হবে এবার বিয়া’ গানগুলো আলোড়ন সৃষ্টি করায় পরবর্তী সময় সালমানের অনেক সিনেমায় এন্ড্রু কিশোরকেই গান গাইতে হয়। অন্যান্য সিনেমার মধ্যে ‘গান আমি গেয়ে যাব এই আসরে’, ‘এই দিন সেই দিন কোনোদিন তোমায় ভুলব না’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা হৃদয়ে সুখের দোলা’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’, ‘তোমাকে চাই শুধু তোমাকেই চাই’, ‘ও সাথীরে যেও না কখনও দূরে’, ‘এ জীবনে যারে চেয়েছি আজ আমি তারে পেয়েছি’সহ আরও বেশকিছু গান জনপ্রিয়তা লাভ করে।
চিত্রনায়ক রিয়াজের প্রথম একক নায়ক হিসেবে ‘হৃদয়ের আয়না’ সিনেমায় ‘তুমি চাঁদের জোছনা নও… আয়না তুমি হৃদয়ের আয়না’, ‘ও বন্ধুরে কথা দাও যাবে না ভুলে’- এন্ড্রুর গাওয়া এ গানগুলোও বেশ শ্রোতাপ্রিয়। পরবর্তী সময়ে এ নায়ক অভিনীত সিনেমার ‘জীবন ফুরিয়ে যাবে ভালোবাসা ফুরাবে না জীবনে’, ‘ঘুমিয়ে থাকো গো সজনী ফুলেরও বিছানায়’, ‘পড়ে না চোখের পলক কী তোমার রূপের ঝলক’, ‘একটু চাওয়া একটু পাওয়া কাছে এসে চলে যাওয়া… মন মানে না আমার মন মানে না’, ‘ঐ চাঁদ মুখে যেন লাগে না গ্রহণ’, ‘গানে গানে চেনা হল’সহ আরও বহু জনপ্রিয় গান রয়েছে রিয়াজের ঠোঁটে। বিশেষ করে ‘পড়ে না চোখের পলক’ গানটি রীতিমতো ঝড় তুলেছে।
সালমানের মৃত্যুর পর তার অসমাপ্ত সিনেমা ‘শেষ ঠিকানা’য় অভিনয় করেন অমিত হাসান। এ সিনেমায় অমিতের ঠোঁটে ‘আমি পাথরে ফুল ফোটাব’ গানটিও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। ফেরদৌস অভিনীত ‘হঠাৎ বৃষ্টি’তে এন্ড্রু কিশোরের কণ্ঠে কোনো গান ছিল না। পরবর্তী সময়ে নায়করাজ রাজ্জাকের ‘সন্তান যখন শত্রু’ সিনেমার ‘এমন একটা মিষ্টি একটা বউ দেখে ফেরে না নয়ন’ গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এরপর এ নায়কের ঠোঁটে এন্ড্রুর গাওয়া ‘সাগরের মতোই গভীর আকাশের মতো অসীম’ ছাড়াও রয়েছে আরও বেশকিছু জনপ্রিয় গান।
চিত্রনায়ক শাকিল খানের ঠোঁটে ‘তোমায় দেখলে মনে হয় হাজার বছর তোমার সাথে ছিল পরিচয়’, ‘এমন একটা দিন নাই’- এন্ড্রুর গাওয়া এ গানগুলোও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। শাকিব খান অভিনীত ‘অনন্ত ভালোবাসা’ সিনেমায় ‘এই যে দুনিয়াতে কত মানুষ আছে’ গানটি শাকিবের ঠোঁটে প্রথম জনপ্রিয় গান। তবে ‘হীরা চুনি পান্না’ সিনেমায় এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া ‘ও আমার সাথীরে যেও না আমাকে ছেড়ে’ গানটি এককভাবে শাকিবের ঠোঁটে বেশি সাড়া ফেলে। পরবর্তীকালে শাকিব খানের ঠোঁটে ‘কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল’, ‘দিবসে তোমাকে চাই’, ‘এক বিন্দু ভালোবাসা দাও’, ‘কী যাদু করেছ বল না’ ও ‘দুধে আলতা বদন তোমার চন্দনের সুবাস ভরা’সহ আরও অনেক জনপ্রিয় গান রয়েছে।
এ সময়ে বাংলাদেশের সিনেমায় নায়ক হিসেবে যারা এসেছেন তাদের অনেকের ঠোঁটেও এন্ড্রু কিশোরের গান রয়েছে। তবে যাদের কথা বিশেষ করে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে তাদের ঠোঁটে যাওয়া গানগুলোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শ্রোতা-দর্শকের মনে আজীবন বেঁচে থাকবেন এন্ড্রু কিশোর। সূত্র-যুগান্তর